মালদা, 1 ডিসেম্বর: মাত্র দেড় বিঘা জমির দখলকে কেন্দ্র করে কাকাকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল ভাইপোদের বিরুদ্ধে ৷ অভিযুক্তদের মধ্যে একজন আবার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ৷ বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বঙ্কুটোলা গ্রামে ৷ খবর পেয়ে মৃতদেহটি নিজেদের হেফাজতে নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যালে পাঠিয়েছে রতুয়া থানার পুলিশ ৷ এক ডিএসপি-র নেতৃত্বে শুক্রবার ঘটনাস্থলে শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত ৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও মৃতের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, অন্তত সাতজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে ৷
নিহতের নাম দেবনারায়ণ যাদব ৷ বয়স 53 বছর ৷ পেশায় গোপালক ৷ বঙ্কুটোলা গ্রামের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা তাঁরা ৷ পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, দেড় বিঘা জমির দখল নিয়ে মাসখানেক ধরে দেবনারায়ণের সঙ্গে তাঁরই ভাইপো, মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শ্যামবিহারী যাদবের ঝামেলা চলছিল ৷ অভিযোগ, এই বিবাদের জেরে কিছুদিন ধরেই শ্যামবিহারী কাকাকে খুনের হুমকি দিতেন ৷ গতকাল রাতে লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি দেবনারায়ণের উপর হামলা চালান ৷ ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে তিনি কাকার পেট চিরে দেন বলে অভিযোগ ৷
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গ্রামবাসীরাও আহত দেবনারায়ণকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ৷ কিন্তু শ্যামবিহারী ও তাঁর দলবল কারওকে এগোতে দেয়নি বলে অভিযোগ ৷ শেষ পর্যন্ত দু’ঘণ্টা পর আহত দেবনারায়ণকে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে তৎক্ষণাৎ মালদা মেডিক্যালে রেফার করে দেন চিকিৎসকরা ৷ মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর ৷
দেবনারায়ণের মেয়ে সুরভি যাদব জানান, “দেড় বিঘা জমির রেজিস্ট্রি নিয়ে বাবার সঙ্গে ওদের ঝামেলা চলছিল ৷ ওরা আমার জ্যেঠার ছেলে ৷ তাঁদের একজন সদানন ওরফে পতন বাবাকে বলে, জমি তোর নামে হয়ে গেলেও সেখানে ফসল লাগাতে দেব না ৷ গতকাল বাবা নতুন ঘরের ছাদ দেওয়ার জন্য বালি-সিমেন্ট আনতে গিয়েছিল ৷ ওরা বাবাকে বলে, বেঁচে থাকাকালীন তোকে ছাদের ঘরে ঘুমোতে দেব না ৷ মরার পর ছাদের ঘরে বসবি, ঘুমোবি ৷ রাতে বাবা ঘুমিয়ে পড়েছিল ৷ আমাদের একটা মোষের বাচ্চা ওদের বাড়িতে চলে যায় ৷ তখন ওরা চিৎকার শুরু করে দেয় ৷ দাদা সেই বাচ্চাটাকে সরিয়ে আনতে যাচ্ছিল ৷ কিন্তু বাবা, দাদাকে ওদের বাড়িতে যেতে দেয়নি ৷ খানিক পরেই লোকজন নিয়ে এসে ওরা আমার বাবার পেটে হাঁসুয়া ভরে দেয় ৷ তারপর টানতে টানতে রাস্তায় নিয়ে যায় ৷ পাশের পুকুরে বাবাকে ডুবিয়ে দেয় ৷ বাবাকে হাসপাতাল নিয়ে যেতে দেয়নি ওরা ৷ গ্রামের লোকজনকেও ওরা বাধা দেয় ৷ বলে, মরে না গেলে বাবাকে ওঠাতে দেবে না ৷ ওদের জন্যই বাবা মরে গেল ৷”