পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

"সুস্থ পরিবেশে কাজ করতে চাই", চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বিক্ষোভ নার্সদের

আজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নার্সরা ৷ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পৌঁছালে তাঁদের বিক্ষোভ চরমে ওঠে ৷ নার্সরা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁদের দাবি না মানা হলে কর্মবিরতির পথে যেতে বাধ্য হবেন ৷

image
নার্সদের বিক্ষোভ

By

Published : Jul 13, 2020, 9:19 PM IST

মালদা, 13 জুলাই : রবিবার চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ছয় নার্সের শরীরে মিলেছিল কোরোনা সংক্রমণের হদিস ৷ আর আজ সামসি গ্রামীণ হাসপাতালের আট স্বাস্থ্যকর্মী কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৷ সংক্রমিতদের তালিকায় রয়েছেন তাঁদের পরিবারের চার সদস্যও ৷ গত 24 ঘণ্টায় জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও 51 জন ৷ মোট সংক্রমিতের সংখ্যা 1 হাজার 130 ৷

আজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নার্সরা ৷ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পৌঁছালে বিক্ষোভ চরমে ওঠে ৷ নার্সরা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁদের দাবি না মানা হলে কর্মবিরতির পথে যেতে বাধ্য হবেন ৷

চাঁচলে নার্সদের বিক্ষোভ

গতকাল চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কর্মরত ছয় নার্সের সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে ৷ অভিযোগ ওঠে, 6 জুলাই ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার জন্য দিলেও রিপোর্ট আসার আগে পর্যন্ত তাঁরা হাসপাতালে নিয়মিত ডিউটি করেছেন ৷ এনিয়ে প্রশ্নও ওঠে ৷ তারই ভিত্তিতে আজ হাসপাতালে বিক্ষেভ দেখান নার্সরা ৷

তাঁদের অভিযোগ, ঠিকমতো সোয়াবের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে না ৷ তাঁদের পর্যাপ্ত মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ারও দেওয়া হচ্ছে না ৷ এই হাসপাতালের যে স্বাস্থ্যকর্মীদের কোরোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে, তাঁদের ঠিকমতো হোম আইসোলেশনে রাখা হয়নি ৷ হাসপাতালও স্যানিটাইজ় করা হয়নি ৷ এরই মধ্যে তাঁদের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে ৷ তাঁরা কাজ করতে চান৷ কিন্তু তাঁদের মাধ্যমে রোগীরা সংক্রমিত হোক সেটা তাঁরা চান না ৷ তাই তাঁরা কর্তৃপক্ষের কাছে কিছু দাবি জানিয়েছেন ৷ দাবি পূরণ না হলে তাঁরা কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছেন ৷

সমর্পিতা দাস নামে এক নার্স বলেন, “আমাদের একাধিক কর্মী কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৷ অথচ আমাদের কোরোনা পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি ৷ আমাদের জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা পর্যন্ত করা হয়নি ৷ আমাদের উপযুক্ত PPE কিট, মাস্ক, গ্লাভস কিছুই দেওয়া হচ্ছে না ৷ আমাদের এসব জিনিস বারবার পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে হচ্ছে ৷ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজেও কোরোনায় সংক্রমিত ৷ বর্তমানে যিনি দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি আজ এসেছিলেন ৷ আমরা শুধু তাঁকে আমাদের প্রয়োজনগুলি জানাচ্ছি ৷ আমরা চাই সাতদিন রোগী ভরতি বন্ধ রেখে হাসপাতাল স্যানিটাইজ় করা হোক ৷ কোরোনা উপসর্গ বা উপসর্গহীন সকল কর্মীদের কোরোনা পরীক্ষা করা হোক ৷ আমাদের এই সমস্ত দাবি মানা না হলে আমরা কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হব ৷”

মিতা কর্মকার নামে এর আকজন বলেন, “আমাদের হাসপাতালের 6-7 জন কর্মী কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৷ সম্ভবত চলতি মাসের 5-6 তারিখ সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে৷ স্বাভাবিকভাবেই যে সময় থেকে বিষয়টি সামনে আসে তখন থেকেই উপযুক্ত পদক্ষেপ করা উচিত ছিল ৷ কিন্তু কিছুই করা হয়নি ৷ এমনকী আমাদের বিষয়টি জানানো হয়নি ৷ আমরা বাইরে থেকে বিষয়টি জানতে পারি৷ যাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন আমরা তাঁদের সংস্পর্শে এসেছি ৷ গাইডলাইন অনুযায়ী যাঁরা সংক্রমিতদের সংস্পর্শে এসেছেন তাঁদের কোয়ারানটিনে থাকা প্রয়োজন ৷ কিন্তু এসব দূরের কথা আমাদের পরীক্ষা পর্যন্ত করানো হয়নি ৷ আমরা সুস্থ পরিবেশে কাজ করতে চাই ৷ গাইনি ওয়ার্ডে চার জন কোরোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই ওয়ার্ড খোলা রয়েছে ৷ স্যানিটাইজ় করা হয়নি ৷ আমাদের দাবি মানা না হলে বাধ্য হয়েই কর্মবিরতিতে যাব ৷”

রতুয়া 1-এর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মাসুদ রহমান বলেন, “কোরোনা আবহেও হাসপাতাল থেকে সমস্ত পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে ৷ পুরো হাসপাতাল চত্বর স্যানিটাইজ় করা হবে ।” চাঁচলের মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় বলেন, “চাঁচল হাসপাতালের বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে ৷ আমরা এনিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে কথা বলছি ৷ সামসি গ্রামীণ হাসপাতালেও আমরা নজর রেখেছি ৷”

ABOUT THE AUTHOR

...view details