পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

3 বছর ধরে নেই বিদ্যুত্‍‌-পানীয় জল, মালদায় বিক্ষোভে অস্বস্তিতে শাসকদল - পথ অবরোধ

বিদ্যুৎ সংযোগ ও পরিস্রুত পানীয় জলের দাবিতে আজ বিক্ষোভে সরব হয়ে ওঠে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ধুমসাডাঙি গ্রাম ৷ এই দুই দাবিতে হরিশ্চন্দ্রপুর-মালদা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে গ্রামবাসী ৷

no electric connection and purified water for a 3 years, villagers blocked road at malda
3 বছর ধরে নেই বিদ্যুত্‍‌-পানীয় জল, মালদায় বিক্ষোভে অস্বস্তিতে শাসকদল

By

Published : Jan 22, 2021, 8:20 PM IST

মালদা, 22 জানুয়ারি: তিন বছর আগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বিদ্যুতের লাইন৷ সেই লাইন আজও ঠিক হয়নি৷ ফলে তিন বছর ধরে বিদ্যুৎহীন এলাকা৷ কুপি কিংবা লণ্ঠনই ভরসা পড়ুয়াদের৷ শুধু তাই নয়, এলাকায় পানীয় জলের সংযোগও নেই তিন বছর ধরে৷ অগভীর নলকূপের জল খেয়ে নানাবিধ পেটের রোগে ভুগছে গ্রামবাসীরা৷ এ নিয়ে একাধিকবার পঞ্চায়েত থেকে বিদ্যুৎ দপ্তরে আবেদন জানানো হয়েছে৷ কাজ হয়নি৷ শেষ পর্যন্ত আজ পথ অবরোধে শামিল হয় আট থেকে আশি৷ অবরোধে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়৷ ভোটের মুখে এই ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে শাসকদলের৷ এই নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপিও৷

বিদ্যুৎ সংযোগ ও পরিস্রুত পানীয় জলের দাবিতে আজ বিক্ষোভে সরব হয়ে ওঠে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ধুমসাডাঙি গ্রাম৷ এই দুই দাবিতে হরিশ্চন্দ্রপুর-মালদা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে গ্রামবাসীরা৷ দীর্ঘ অবরোধে নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের৷ অবরোধে আটকে পড়ে পণ্যবাহী বহু লরিও৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০১৭ সালের বন্যায় এই গ্রামের বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলি ধসে পড়ে৷ ফলে ২৯টি বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ বন্যার জল নেমে যায় ক’দিন পরেই৷ কিন্তু বিদ্যুতের লাইন আর চালু হয়নি৷ এখন গ্রামে বাড়ির সংখ্যা বেড়েছে৷ বিদ্যুতের জন্য পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার আবেদন জানানো হয়েছে৷ কিন্তু কোনও কাজ হয়নি৷ এলাকায় পানীয় জলের কোনও বন্দোবস্তও করা হয়নি৷

স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিমা রবিদাস বলেন, “গত বছর আমার মেয়েটা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে৷ কুপি-লণ্ঠনের আলোতেই তাকে পড়াশোনা করতে হয়েছে৷ এলাকার সব ছেলেমেয়েরাই এভাবে কষ্ট করে পড়াশোনা করে৷ গরমে টেকা যায় না৷ নীয় জলেরও কোনও ব্যবস্থা নেই৷ প্রধান কিংবা পঞ্চায়েত সদস্য আমাদের পাত্তাই দেয় না৷ বিদ্যুতের দাবিতে আমরা পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ দপ্তরে আবেদন জানিয়েছি৷ কিন্তু দিচ্ছি, দেব বলে ওরা তিন বছর পার করে দিল৷ তাই আজ আমরা পথ অবরোধ করে নিজেদের দাবিতে সরব হয়েছি৷”

একই বক্তব্য আরেক বাসিন্দা বিজয় মুশহরের৷ তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ আর পানীয় জলের দাবিতে সব জায়গায় আবেদন করেছি৷ তার সমস্ত নথিপত্র আমাদের কাছে রয়েছে৷ এমনিতেই আমরা নীচু জাত৷ কেউ গুরুত্ব দিতে চায় না৷ এই অবস্থায় সরকার যদি পানীয় জল ও বিদ্যুতেরও ব্যবস্থা না করে, তবে আমরা কীভাবে চলব?”

আরও পড়ুন:হাসপাতাল চত্বরে নিয়মিত বসছে নেশার আসর, নির্বিকার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

একুশের ভোটের আগে গ্রামবাসীদের এমন বিক্ষোভে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে শাসক শিবির৷ হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলেন, “ওখানে পুরোনো বিদ্যুৎ লাইনের তার কিছু দুষ্কৃতী কেটে দিয়েছে৷ ফলে গোটা এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে৷ সেখানে আগে ৩৭টি পরিবার ছিল৷ এখন ৫৮টি পরিবার রয়েছে৷ তারা বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত রয়েছে৷ আমরা এ নিয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি৷ তারা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল জমা দিতে বলেছে৷ নতুন করে কানেকশনের কথাও বলা হয়েছে৷ আমরা ইতিমধ্যে কিছু নতুন কানেকশনের জন্য কোটেশন করেছি৷ বকেয়া বিল মিটিয়ে দেওয়া হলে খুব তাড়াতাড়ি ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ করা হবে৷ পানীয় জলের ব্যবস্থাও দ্রুত করা হবে৷”

এ দিকে ভোটের আগে এ নিয়ে শাসকদলকে বিঁধতে ছাড়েননি বিজেপির মণ্ডল সভাপতি রূপেশ আগরওয়াল৷ তিনি বলেন, “গোটা রাজ্যেই এমন অরাজকতা চলছে৷ এই সরকারের বিরুদ্ধে চারদিকে বিক্ষোভ চলছে৷ ধুমসাডাঙি একটি প্রত্যন্ত গ্রাম৷ ২০১৭ সালের বন্যায় ওই গ্রামে অনেক বাড়ি ধসে যায়৷ সরকারি প্রকল্পে সেই সমস্ত বাড়ি আর তৈরি হয়নি৷ ওই গ্রামে বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই৷ মানুষ এখন এই সরকারের পরিবর্তন চাইছে৷ একুশের ভোটে আমরা ক্ষমতায় এলে এমন বিক্ষোভ রাজ্যে আর কোথাও হবে না৷”

ABOUT THE AUTHOR

...view details