মালদা, 17 জুন : অবশেষে মালদা জেলা পরিষদের দলত্যাগী সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করল তৃণমূল ৷ আজ মালদার সহকারী ডিভিশনাল কমিশনারের হাতে সেই অনাস্থাপত্র তুলে দিয়েছেন জেলা পরিষদের দলনেতা সামসুল হক ৷ এদিকে দলত্যাগী সভাধিপতিকে দলে ফেরানোর বিষয়ে ধোঁয়াশা কাটালেন না জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর ৷
এদিন মৌসম নুর জানান, “জেলা পরিষদের যে সদস্যরা অন্য দলে চলে গিয়েছেন, তাঁরা যদি দলে ফেরার আবেদন জানান, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ এমন কিছু সদস্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ৷ রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন সাপেক্ষে তাঁদের দলে ফেরানো হবে ৷ তবে সবাইকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া যাবে না ৷ বিশেষ করে যাঁরা জেলা পরিষদ ভাঙার মূল ষড়যন্ত্রী, তাঁদের আমরা দলে ফেরাতে চাইছি না ৷ যেমন সরলা মুর্মু ৷ তাছাড়া তিনি দলে ফিরতে চেয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানালেও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি ৷” যদিও তৃণমূলের আনা অনাস্থায় গুরুত্ব দিতে চাননি সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ৷
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদা জেলা পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করে তৃণমূল ৷ সভাধিপতি করা হয় প্রাক্তন কংগ্রেস বোর্ডের সহকারী সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডলকে ৷ সেই সময় তৃণমূলের মালদার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই কংগ্রেস থেকে শাসক দলে যোগ দিয়েছিলেন গৌরবাবু ৷ শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে তিনি জেলার রাজনীতিতে পরিচিতও ৷ নেতার হাত ধরেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি ৷ পুরস্কার হিসাবে তাঁকে মানিকচক কেন্দ্রের প্রার্থী করে পদ্ম শিবির ৷ কিন্তু ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী, প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের কাছে ধরাশায়ী হন গৌর ৷ বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পরেই গৌরবাবুর সভাধিপতির আসন ছিনিয়ে নিতে তৎপর হয় শাসক শিবির ৷ এরই মধ্যে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, জেলা পরিষদে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ ৷ যদিও শাসকদল সদস্যদের একজোট করে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেয় ৷ ভোট পরবর্তী সময়ে গৌরবাবুর বিরুদ্ধে তৃণমূলের অনাস্থা আনা ছিল সময়ের অপেক্ষা ৷ গত পরশু দলের তরফে জানানো হয়, 16 জুন সেই অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হবে ৷ কিন্তু জামাইষষ্ঠীর ছুটি ঘোষণা হওয়ায় গতকাল তা জমা দিতে পারেনি তৃণমূল শিবির ৷ আজ সহকারী ডিভিশনাল কমিশনার দেবতোষ মণ্ডলের হাতে তৃণমূলের 23 জন সদস্যের স্বাক্ষরিত অনাস্থা প্রস্তাব তুলে দেওয়া হয়েছে ৷