পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

উন্নয়ন যখন রাস্তায় দাঁড়িয়েই আছে, তখন ভোট দিতে দিন : আবদুস সাত্তার

"অনুব্রতর ভাষায় আমরা কথা বলি না । তবে আমারও বেঁচে থাকার অধিকার আছে । তার জন্য যখন যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমাকে নিতে হবে ।" আজ দুপুরে মালদা জেলা কংগ্রেসের সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের একথা বলেন কংগ্রেস নেতা আবদুস সাত্তার ।

By

Published : Apr 20, 2019, 9:06 PM IST

Updated : Apr 20, 2019, 11:58 PM IST

মালদা, 20 এপ্রিল : "উন্নয়ন যখন রাস্তায় দাঁড়িয়েই আছে, তখন মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দিন । মনে রাখতে হবে, শাসক যখন ভয় পেতে শুরু করে, তখন বুঝতে হবে শাসকের বিপদ খুব আসন্ন । তখন শাসক মানুষকে বিশ্বাস করতে পারে না ।" আজ মালদায় এক সাংবাদিক বৈঠকে একথা বললেন কংগ্রেস নেতা আবদুস সাত্তার ।

আজ দুপুরে জেলা কংগ্রেসের সদর দপ্তর হায়াত ভবনে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি । বৈঠকে ছিলেন আবদুস সাত্তার ও কংগ্রেসের মালদা জেলার পর্যবেক্ষক জাভেদ খানও । বৈঠকে মোস্তাক আলম বলেন, "নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তৃতীয় দফার ভোটে প্রতিটি বুথে নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে । কিন্তু আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি, যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী আপাতত এই জেলায় এসেছে, তাতে 92 শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান নিয়োগ করা যাবে ৷ বাকি বুথগুলিতে মাইক্রো অবজ়ারভার এবং রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ নিয়োগ করা হবে । কিন্তু দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে রায়গঞ্জের যে বুথগুলিতে রাজ্য পুলিশ ছিল, পুলিশ সুপারের নির্দেশ মেনে সেই বুথগুলি দখল করা হয়েছে । মালদাতেও একই ঘটনা ঘটবে ৷ পুলিশ সুপার কিংবা OC-দের জানা থাকবে কোন বুথে কেন্দ্রীয়বাহিনী আছে আর কোন বুথে রাজ্য পুলিশ । রাজ্য পুলিশ নিয়োগ থাকা বুথগুলি নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠলেই পুলিশকর্তারা মোবাইল ফোনের সুইচ বন্ধ করে দেবেন । এর আগে আমরা তেমনটাই দেখেছি । আমরা চাই, মালদার মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক ।"

শুনুন আবদুস সাত্তারের বক্তব্য়

মোস্তাক বলেন, "অনুব্রতর ভাষায় আমরা কথা বলি না । তবে আমারও বেঁচে থাকার অধিকার আছে । তার জন্য যখন যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমাকে নিতে হবে । শাসকদলের জনৈক মন্ত্রী এখানে এসে বলছেন, লিড না দিলে চেয়ার রাখব না । জেলার ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় সবই তো তাদের দখলে। কিন্তু মানুষ বলতে শুরু করেছে, প্রধানরা তো ঘর তৈরির টাকা মেরে খেয়ে নিয়েছে । আমরা কী পেয়েছি? কংগ্রেসের আমলে বিনা পয়সাতেই প্রধান, সভাপতি, সভাধিপতি হয়েছে । এখন তো শুধু নোটের খেলা চলছে । এরা প্রশাসনকে বলে দিয়েছে, আমাদের ভোট লুট করতে দাও । আর তোমরা নিজেরা যা ইচ্ছে কর । কিছু বলতে যাব না । তাই আমরা প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানাচ্ছি । জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার এখন নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি । তাঁদের বলতে হবে, এই জেলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে । কোথাও রক্ত ঝরবে না । প্রতিটি মানুষ নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন । একটা কথা বলে দিতে পারি, যুগ বদলে গেছে । এখন যারা বলছে, 23 মে-র পর আমরাই থাকব, তারা যেন মনে রাখে কংগ্রেস কর্মীরা এই জেলায় মোকাবিলা করার জন্য তৈরি । তিনি আরও বলেন, "এই জেলায় পুলিশের খাতায় নাম থাকা দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না । অথচ যাঁরা শাসকদলের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, সেই সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা রুজু করছে । প্রতিটি থানা এলাকাতেই এই ঘটনা ঘটছে । তৃণমূলই এর তালিকা তৈরি করে দিচ্ছে ।"

শুনুন মোস্তাক আলমের বক্তব্য

সাংবাদিক বৈঠকে প্রাক্তন মন্ত্রী, বর্তমান কংগ্রেস নেতা আবদুস সাত্তার বলেন, "গত দু'দফার নির্বাচনে আমরা দেখেছি, যে বুথগুলিতে রাজ্য পুলিশ কিংবা সিভিক ভলান্টিয়ার থাকছে, সেই বুথগুলি প্রভাবিত হয়ে যাচ্ছে । তাই আমরা বারবার সব জায়গায় আবেদন জানিয়েছি, ভোটটা যেন ঠিকমতো হয় । মানুষ যাতে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন । 1952 সালে দেশে প্রথম নির্বাচন হয়েছিল । তখন দেশের 90 শতাংশ মানুষ নিরক্ষর ছিলেন । তখন তো এত সন্ত্রাস কিংবা বুথ দখল হয়নি? তাহলে 2019 সালে এই অবস্থা হবে কেন? এতই যখন উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, তাহলে মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দিন! যারা এতদিন BJP-র সঙ্গে ঘর করেছে এখন তারাই কংগ্রেস-বামেদের সঙ্গে BJP-র যোগ খুঁজছে । তাদের একটাই বক্তব্য, ভোট বিভাজন কর আর BJP কে সুবিধা পাইয়ে দাও । বিশেষত মালদা আর মুর্শিদাবাদে এই খেলা শুরু হয়েছে । রায়গঞ্জে ভোটের দিন তৃণমূল যা করেছে, কাদের কীভাবে আটকানো হয়েছে তা সংবাদমাধ্যম দেখিয়েছে । তা বলতেও লজ্জা লাগছে । পশ্চিমবঙ্গে গোপন একটা আঁতাত চলছে । আমরা মানুষকে সচেতন করছি, সতর্ক করছি ।"

Last Updated : Apr 20, 2019, 11:58 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details