মালদায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যা ঘিরে রহস্য মালদা, 20 ডিসেম্বর: সাতসকালে শোওয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর গলায় ফাঁস লাগানো দেহ ৷ এই ঘটনায় সকাল থেকে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুরনো মালদা পৌরসভার 14 নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়ায় ৷ মৃত ছাত্রীর বিছানা থেকে একটি সুইসাইড নোট পেয়েছে মালদা থানার পুলিশ ৷ কী কারণে ওই ছাত্রী এমন চরম সিদ্ধান্ত নিল, তা স্পষ্ট না হলেও এর পিছনে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ, পরিবার ৷ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে (Minor girl death by suicide in Malda) ৷
সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মঘাতী ছাত্রীর নাম প্রিয়াংকা ঘোষ ৷ বয়স 14 বছর ৷ বাবা জহর ঘোষের ফাস্ট ফুডের দোকান রয়েছে ৷ তাঁর চারটি মেয়ে ৷ বড় তিনটির বিয়ে হয়ে গিয়েছে ৷ প্রিয়াংকা মালদা শহরের গিরিবালা লস্কর কন্যা শিক্ষালয়ে পড়াশোনা করত ৷ সম্প্রতি তার সঙ্গে মালদা শহরের তেলিপুকুর এলাকার এক যুবকের প্রেমের সম্পর্কও গড়ে ওঠে বলে জানিয়েছে পরিবার ৷ ঘোষপাড়া এলাকায় এখন তারাকালীর মেলা চলছে ৷ সোমবার সন্ধ্যায় সেই মেলায় গিয়েছিল প্রিয়াংকা ৷ রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ বাড়ি ফিরে এসে সে জানায়, মেলায় ভেলপুরি খেয়েছে, তাই রাতে আর খাবে না ৷ একথা বলে সে নিজের শোওয়ার ঘরে ঢুকে পড়ে ৷
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার পর আত্মঘাতী লেডি ব্রেবোর্নের ছাত্রী !
মঙ্গলবার সকালে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও প্রিয়াংকা ঘরের দরজা খোলেনি ৷ পরিবারের লোকজন দরজা ধাক্কাধাক্কি করলেও সে দরজা না খোলায় সবার সন্দেহ হয় ৷ এরপর দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই সবাই দেখতে পায়, গলায় শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে প্রিয়াংকার দেহ ৷ বিছানায় পড়ে রয়েছে একটি সুইসাইড নোট ৷ সঙ্গে একটি ছোট মোবাইল ফোনও ৷ তার কাছে কীভাবে এই মোবাইল ফোন এল, তা জানে না পরিবার ৷
পরিবারের দাবি, প্রিয়াংকার কাছে কোনও মোবাইল ফোন ছিল না ৷ একাধিকবার বায়না করলেও তাকে মোবাইল ফোন কিনে দেওয়া হয়নি ৷ তাহলে কি তার প্রেমিকই মোবাইল ফোন দিয়েছে ? ওই মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড থেকে দেখা যাচ্ছে, গতকাল রাত প্রায় সাড়ে 12টা পর্যন্ত প্রিয়াংকা ওই ফোনে একটি ছেলের সঙ্গে কথা বলেছে ৷ যাকে পরিবারের লোকজন তার প্রেমিক বলে ভাবছে ৷ সুইসাইড নোটে সে লিখেছে, 'ভালো থেকো মা-বাবা ৷ আমি আর বেঁচে থাকতে চাই না ৷ আমি তোমাদের কাছে বোঝা হয়ে আর থাকব না ৷ ভালো থেকো ৷'
প্রিয়াংকার জামাইবাবু প্রশান্ত সরকার বলেন, "গতকাল মেলা থেকে ঘুরে এসে স্বাভাবিকই ছিল প্রিয়াংকা ৷ বাড়ির সবার সঙ্গে কথাও বলে নিজের ঘরে ঘুমোতে চলে যায় সে ৷ আজ সকালে ওর বিছানা থেকে একটা মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছে ৷ ওর কাছে যে মোবাইল ফোন রয়েছে, সেটা আমাদের কারও জানা ছিল না ৷ গতকাল সেই ফোনে সে রাত প্রায় একটা পর্যন্ত এক বন্ধুর সঙ্গে গল্প করে ৷ ওই বন্ধুর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে মনে হয় ৷ আমাদের ধারণা, প্রেমিকের চাপেই সে আত্মহত্যা করেছে ৷ আমরা চাই, ওই প্রেমিকের যেন সাজা হয় ৷"
আরও পড়ুন: ঘুষের জন্য পুলিশের চাপ, আত্মঘাতী গঙ্গারামপুরের ব্যবসায়ী