মালদা, 23 মে : 2020 সাল ৷ মার্চের মাঝামাঝি ৷ দেশে হানা দিল সার্স কোভিড 2 ভাইরাস ৷ পোশাকি নাম করোনা ৷ তার আগেই ইউরোপ আর আমেরিকার দেশগুলি দেখিয়ে দিয়েছে, এই ভাইরাসের মারণ ক্ষমতা ৷ ভাইরাসের শৃঙ্খল ভাঙতে দেশ জুড়ে শুরু হল লকডাউন ৷ চলল দফায় দফায় ৷ এতে ভাইরাসের শক্তি কতটা কমল জানা নেই, তবে জীবনীশক্তি হারিয়ে ফেললেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কর্মরত মালদার পরিযায়ী শ্রমিকরা ৷ অনেকে জমানো অর্থ প্রায় নিঃশেষ করে ঘরে ফিরলেন ৷ অনেককে থেকে যেতে হল কর্মস্থানেই ৷ ধীরে ধীরে করোনার তীব্রতা কমতে শুরু করল ৷ দেশ অনেকটাই পুরোনো ছন্দে ফিরতে লাগল ৷ কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দিলেন, প্রথম ধাক্কার পর দেশবাসী যেন এই ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য তৈরি থাকেন ৷
সেই আশঙ্কা সত্যি করে এখন দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে ৷ নির্বাচন ও উৎসব শেষে রাজ্যেও চলছে লকডাউন ৷ বন্ধ সমস্ত গণপরিবহণ ৷ আরও একবার পেটে হাত পড়েছে মালদার লাখ তিনেক পরিযায়ী শ্রমিকের ৷ ঈদ আর ভোটে অংশ নিতে তাঁরা ঘরে ফিরে এসেছিলেন ৷ ভেবেছিলেন, ঈদ শেষে ফের কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাবেন ৷ কিন্তু উপায় নেই ৷ এখন তাঁদের অনেকেই অর্ধাহারে দিন কাটাতে শুরু করেছেন ৷ এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের স্ত্রী ও বাড়ির লোকজনও চাইছেন, তাঁরা ফের কাজে ফিরে যান ৷ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার থেকে অভুক্ত হয়ে মৃত্যুর যন্ত্রণা তাঁদের কাছে বেশি বেদনাদায়ক ৷ লকডাউনে চরম সমস্যায় পড়েছেন ভিনরাজ্যে শ্রমিক সরবরাহকারীরাও ৷ তাঁরাও এখন দিন গুনছেন, কবে লকডাউন প্রত্যাহার হবে ৷
ঈদের কয়েকদিন আগে মহারাষ্ট্র থেকে বাড়ি ফিরেছেন তসলিম আরিফ ৷ সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন ৷ ভেবেছিলেন, স্ত্রী-ছেলেমেয়েদের সঙ্গে উৎসব শেষ করে ফের কর্মক্ষেত্রে ফিরবেন ৷ লকডাউনে এখন ঘরে বসে রয়েছেন ৷ বললেন, “গতবারের লকডাউনে মহারাষ্ট্রেই থেকে যেতে হয়েছিল ৷ এবার ঈদ পালন করতে ঘরে ফিরেছিলাম ৷ লকডাউনে আটকে পড়েছি ৷ মহারাষ্ট্রেও নাকি লকডাউন চলছে ৷ এদিকে কাজ না করে খেতে খেতে পুঁজি প্রায় শেষ ৷ এলাকাতেও কাজ পাচ্ছি না ৷ তাই সরকারের কাছে কিছু সহায়তা আশা করছি ৷”