মালদা, 31মে : বাকিদের মতো বাড়ি ফিরতেই রাজস্থান থেকে'শ্রমিক স্পেশাল'-এউঠেছিলেন । অনেকদিন পর বাড়ি ফেরারআনন্দও ছিল খুব । স্বস্তিতেই ছিলেন । তবে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন । তারপরই মারাযান । সহযাত্রীরাই ফোন করে ঘটনাটি পরিবারকে জানায় ।
কাজের সূত্রে দুই দশক ধরে রাজস্থানেই থাকতে বুদ্ধু পরিহার । প্রথমেতিনি সেখানে শ্রমিকের কাজ করতেন । পরে পেশা পরিবর্তন করে ডিম বিক্রি শুরু করেন ।সব ঠিকই চলছিল । রোজগারের টাকা থেকে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের ব্লক গ্রামেরবাড়িতেও টাকা পাঠানো,বছরে একবার বাড়ি আসা,সবকিছু ঠিকই চলছিল । তবে,সব কিছু যেন থমকে যায় কোরোনাসংক্রমণের ফলে । কোরোনা রুখতে সব পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয় সরকারের তরফে । বন্ধকরে দেওয়া হয় দোকানপাটও । ফলে কাজে ইতি টানেন বুদ্ধুও । কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাতেরটাকা-পয়সাও শেষ হয়ে যায় । বাড়ি ফেরার ইচ্ছা থাকলেও উপায় ছিল না ।
অবশেষে পরিযায়ীদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় সরকার । বাড়ি ফিরতেপারবেন ভেবে খুশি ছিলেন বুদ্ধু পরিহারও । সেই মতো শুক্রবার রাজস্থান থেকে শ্রমিকস্পেশাল ট্রেনে ওঠেন তিনি । সমস্যা শুরু হয় কানপুর পেরোনোর পরই । সহযাত্রীদের কথায়,কানপুর ও এলাহাবাদ স্টেশনের মাঝামাঝিএলাকায় অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন তিনি । পরিস্থিতি খুবই খারাপ হতে থাকে । শেষেট্রেনেই মৃত্যু হয় তাঁর ।
সহযাত্রীদের মাধ্যমে বুদ্ধু পরিহারের মৃত্যুর খবর জানতে পারেনপরিবারের লোকজন । স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বাপন মল্লিক জানান, "গতরাত সাড়ে10টা নাগাদ আমার কাছে ফোন আসে । জানতেপারি,এলাকার বাসিন্দা বুদ্ধু পরিহার বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনে মারা যান ।তাঁর সহযাত্রীদের থেকে জানতে পারি,দীর্ঘদিন ধরে তিনি যক্ষা রোগেভুগছিলেন । রাজস্থানেই তিনি চিকিৎসা করাচ্ছিলেন । আজ সকালে মালদা টাউন স্টেশনেতাঁর মৃতদেহ নামানো হয় । দেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । উনি পরিবারেরএকমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন । স্থানীয় বাসিন্দারা কিছু টাকা-পয়সা দিয়ে পরিবারেরসদস্যদের মালদা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । তবে,তিনি কোরোনা আক্রান্ত ছিলেন বলে এখনওকোনও খবর নেই । এ ধরনের তথ্য এলে স্বাস্থ্য বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে ।"
ঘটনা প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর1ব্লকের সমষ্টি উন্নয়নের আধিকারিকঅনির্বাণ বসু বলেন, "খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা । ওই পরিযায়ী রাজস্থান থেকে বাড়ি ফেরারপথে ট্রেনে মারা গিয়েছেন । তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা হাসপাতালে পাঠানোহয়েছে । ওই শ্রমিক কোরোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা সেই পরীক্ষাও করা হবে । রাজ্যসরকারের বৈতরণী প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁর সৎকার করা হবে ।"