মালদা, 24 নভেম্বর : মালদা জেলায় বরিন্দ এলাকা হিসাবে পরিচিত পুরাতন মালদা, গাজোল, বামনগোলা ও হবিবপুর ব্লক । এই চারটি ব্লকে কৃষিকাজে জলসেচের প্রচণ্ড অভাব রয়েছে । নদী কিংবা খাঁড়ি থাকলেও এখনও পর্যন্ত সরকার সেখানে জলসেচের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি । ভূগর্ভস্থ জলস্তরও অনেক নীচে । ফলে সাধারণ চাষিরা মাটির অত নীচ থেকে সেচের জন্য জল উত্তোলন করতে পারে না । এই চারটি ব্লকের বেশিরভাগ কৃষিজমি একফসলি । মূলত বৃষ্টির উপরেই চাষিদের নির্ভর করতে হয় । আমন ধানের মরশুম ছাড়া বছরের অন্যান্য সময় কৃষিজমি ফাঁকাই পড়ে থাকে । তাই এই এলাকার কৃষকরা আমন মরশুম ছাড়া অন্য সময় বিকল্প চাষের সন্ধানে থাকে । একসময় বামনগোলা ব্লকে আনারস চাষও শুরু হয়েছিল । কিন্তু সরকারি সহায়তা না পেয়ে এখন সেই চাষ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে । এরইমধ্যে বামনগোলা ব্লকের কিছু কৃষক শীতকালীন ফুল গাঁদা চাষের উদ্যোগ নিয়েছিল । কিন্তু এবার কোরোনার জন্য সেই চাষও মুখ থুবড়ে পড়েছে । এই অবস্থায় বছরের বাকি সময় কীভাবে কাটবে, ভেবেই পাচ্ছে না গাঁদা চাষিরা ।
মালদা জেলায় কৃষিজমির সিংহভাগ দখল করে রেখেছে আম, লিচু এবং রেশম চাষ । বাকি জমিতে ধান, পাট ও আলু চাষে জোর দেয় চাষিরা । কিন্তু সমস্যায় পড়ে বরিন্দ এলাকার কৃষকরা । এর মূল কারণ, জমিতে জলসেচের সমস্যা । এরইমধ্যে বামনগোলা ব্লকের পাকুয়াহাট এলাকার এক চাষি প্রায় 35 বছর আগে শুরু করেছিলেন গাঁদা চাষ । লাভ বেশি দেখে এই চাষে উৎসাহিত হয়েছিল স্থানীয় কৃষকদের অনেকে । ধীরে ধীরে এই চাষ ছড়িয়ে পড়ে পাশের হবিবপুর ও গাজোল ব্লকে । অল্প হলেও কিছু কৃষক এই চাষে হাত পাকাচ্ছিল । কিন্তু কোরোনা আর লকডাউনের জেরে এবার গাজোল ও হবিবপুর ব্লকে এই চাষ পুরোপুরি বন্ধ । এই দুই ব্লকের ফুলচাষিরা পাড়ি জমিয়েছে ভিনরাজ্যে । যদিও এবার সামান্য পরিমাণে গাঁদা চাষ হয়েছে । মালদা জেলায় এই চাষের আমদানি হয়েছিল মূলত বামনগোলার খিড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দা খোকন ভক্তের হাত ধরে ।