মালদা, 9 এপ্রিল : অকাল বৃষ্টি আগেই পথে বসিয়েছিল জেলার আলুচাষিদের। চাষিরা আশঙ্কা করেছিলেন, দু’বছর আগের মতো এবারও জমি থেকে আলু ঘরে তুলতে পারবেন না তাঁরা । যদিও পরের দিকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হয় । তাই এবার কিছু আলু অন্তত জমি থেকে তুলতে পেরেছেন তাঁরা । কিন্তু শুধু বিরূপ আবহাওয়া নয়, আলুচাষিদের লড়তে হচ্ছে জমি থেকে ফসল তোলার পরেও । একেই জেলায় পর্যাপ্ত হিমঘর নেই, তার উপর আলুর বন্ড নিয়ে চলছে কালোবাজারি । তাই অনেক চাষি জমি থেকে তোলা আলু আমবাগান কিংবা ঘরে মজুত করে রেখেছেন । অথবা নামমাত্র দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন । তাঁদের বক্তব্য, প্রশাসন এদিকে নজর না দিলে তাঁদের হয়তো এই চাষ থেকে সরে আসতে হবে (Malda's Potato Farmers in Crisis Due to lack of Cold Storage Bonds) ।
প্রসঙ্গত, মালদা জেলায় সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয় পুরাতন মালদা ব্লকে । তারপরেই রয়েছে গাজোল ব্লক । কিন্তু উৎপাদিত আলু মজুত রাখার জন্য জেলায় পর্যাপ্ত হিমঘর নেই । বিষয়টি জানেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও । সম্প্রতি তিনি মালদার প্রশাসনিক সভায় আরও হিমঘর তৈরির জন্য জেলার ব্যবসায়ীদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন । কিন্তু এখনও পর্যন্ত নতুন কোনও হিমঘর তৈরি হয়নি । বর্তমানে পুরাতন মালদা ব্লকে চারটি আর গাজোল ব্লকে তিনটি হিমঘর রয়েছে । চাষিরা জানাচ্ছেন, আরও হিমঘর তৈরি হলে তাঁদের আলু মজুত করার সমস্যা থাকবে না ।
পুরাতন মালদার মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই প্রায় 3100 হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয় । ওই পঞ্চায়েতের সাহারা গ্রামের আলুচাষি মনোরঞ্জন সরকার বলেন, "এবার আমি 10-12 বিঘা আলু চাষ করেছি । প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে 30 হাজার টাকা । বৃষ্টির জন্য যে ফলনের আশা করেছিলাম তার কিছুই হয়নি । আমাদের খরচ তোলাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে । বিঘা প্রতি 50 থেকে 70 প্যাকেট (50 কিলোর প্যাকেট) করে আলু পাওয়া যাচ্ছে । আলু বিক্রি করতে গিয়ে দেখছি বাজারে দাম নেই । হিমঘরে রাখতে গিয়ে বন্ড পাচ্ছি না । হিমঘরে রাখতে না পারায় আলু পচতে শুরু করেছে । এখন আলু কম দামে বাজারে বিক্রি করতে হবে ।"