মালদা, 25 জুলাই: জলশূন্য চেন্নাই । দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে দেশের আরও 21টি শহরের ভূগর্ভস্থ জলস্তর । সেকথা ইতিমধ্যে ঘোষণা করে দিয়েছে নীতি আয়োগ । সারা দেশজুড়ে বাড়ছে জল সংকট । এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই হইচই পড়ে গিয়েছে দেশজুড়ে । দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জল সংরক্ষণ নিয়ে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে । ইতিমধ্যেই জল বাঁচিয়ে জলসংরক্ষণে পথপ্রদর্শক হয়ে উঠল পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশন।
পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে জল বাঁচানোর কাজ শুরু করা হয়েছে মালদা টাউন স্টেশনে । সেখানে প্রতিদিন প্রায় ৬০ হাজার লিটার জল পুনর্ব্যবহার যোগ্য করে অন্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে । ভবিষ্যতে জল সংরক্ষণের জন্য আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মালদা রেলওয়ে ডিভিশনাল ম্যানেজার ।
লন্ড্রিতে ধোয়া হচ্ছে ট্রেনে ব্যবহৃত কাপড় ইতিমধ্যেই মালদা শহরের ভূগর্ভস্থ জলস্তর অনেকটা কমে গিয়েছে । শুধু শহর নয়, জেলার ছবিটাও প্রায় একইরকম । যা স্বীকার করে নিয়েছে ইংরেজবাজার পৌরসভা ও সেচদপ্তর । জেলার বোরিন্দ এলাকা হিসেবে খ্যাত হবিবপুর, বামনগোলা, গাজোল ও পুরাতন মালদায় পরিস্থিতিটা বেশি ঘোরালো । সাধারণ পাম্প ব্যবহার করে এসব এলাকায় জল ওঠে না । একই ছবি দেখতে পাওয়া যায় চাঁচল রতুয়া ও হরিশ্চন্দ্রপুরের কিছু এলাকায় । এদিকে, এবছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতও এখনও পর্যন্ত হয়নি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছে অনেকেই । কিন্তু মালদা রেল ডিভিশনের উদ্যোগটা যেন চোখে পড়ছে বেশি করে ।
পুনর্ব্যবহারযোগ্য জল দিয়ে ধোয়া হচ্ছে প্ল্যাটফর্ম মালদা রেল ডিভিশন সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনে ব্যবহৃত চাদর, বালিশের কভার, টাওয়েল, জানালার পর্দা প্রভৃতি মালদা টাউন স্টেশনের লন্ড্রিতে ধোওয়া হয় । এর জন্য প্রতিদিন লন্ড্রিতে প্রায় 50 থেকে 60 হাজার লিটার জল ব্যবহার করা হয় । এতদিন সেই ব্যবহৃত জল নালায় ফেলে দেওয়া হত । এখন সেই ব্যবহৃত জলকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে ব্যবহার করা হচ্ছে মালদা টাউন স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সহ শৌচাগার পরিষ্কারের কাজে। রেলকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, এই ব্যবস্থা সম্ভবত দেশে প্রথম । অন্তত পূর্ব রেলের কোথাও এমন ব্যবস্থা চালু হয়েছে বলে তাঁদের জানা নেই ।
পুনর্ব্যবহারযোগ্য জল দিয়ে ধোয়া হচ্ছে রেললাইন মালদা রেলওয়ে ডিভিশনাল ম্যানেজার তনু চন্দ্রা বলেছেন, “বর্তমানে স্টেশনে ওয়েস্টেজ ওয়াটার ট্রিটমেন্টের একটি সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে । সেই সিস্টেমের মাধ্যমে লন্ড্রিতে প্রতিদিন ব্যবহৃত প্রায় 60 হাজার লিটার জলকে ট্রিটমেন্ট করে স্টেশনের রিজার্ভারে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে । স্টেশন পরিষ্কারের ক্ষেত্রে এখন সেই জল ব্যবহার করা হচ্ছে । এতে পানীয় জলের সাশ্রয়ের সঙ্গে অব্যবহৃত জলকেও ব্যবহার করা যাচ্ছে । ভবিষ্যতে আমরা ভাগলপুর স্টেশনের লন্ড্রিতেও এই সিস্টেম ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছি । তার সঙ্গে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের কথাও আমরা ভাবনাচিন্তা করছি ।”