মালদা, 10 নভেম্বর: তৃণমূল নেতার দাদাগিরিতে ঘরছাড়া এক রিকশাচালকের পরিবার ৷ শুধুমাত্র সন্দেহের বশে ওই তৃণমূল নেতা সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ওই পরিবারের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ ৷ বেধড়ক মারধর করা হয় পরিবারের চার মহিলা সদস্যকে ৷ 14 বছরের এক নাবালিকাকে জামাকাপড় ছিঁড়ে প্রায় বিবস্ত্র করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ ৷ খবর পেয়ে পুলিশ ওই চার মহিলাকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেছে ৷ এই ঘটনায় তৃণমূল নেতা-সহ মোট 15 জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন পরিবারের সদস্যা ৷
একই সঙ্গে ওই পরিবারের অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতা হুমকি দিয়েছে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার ‘অপরাধের’ শাস্তি তাঁদের পেতেই হবে ৷ বাড়ি ফিরলে তাঁদের প্রত্যেককে খুন করা হবে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ আর তার জেরে তাই প্রাণভয়ে তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷ আর সেকারণে খোলা আকাশের নীচেই দিন কাটছে তাঁদের ৷ ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানা এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে ৷ অবশ্য তৃণমূলের জেলা সভাপতি জানিয়েছেন, যত বড়ই নেতা হোন, এমন অন্যায় কাজ করলে তাঁকে শাস্তি পেতেই হবে ৷ কবে এই পরিবারটি বাড়ি ফিরতে পারে, এখন সেটাই দেখার ৷
থানায় অভিযোগ দায়ের করা ওই প্রৌঢ়া বলেন, “আমরা তৃণমূলের সমর্থক ৷ তৃণমূলকেই ভোট দিই ৷ এবার পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের গ্রামে প্রার্থী হয়েছিল অরুণ মণ্ডল ৷ আমার বাড়িতে ভোট চাইতে এসে হুমকি দিয়েছিল, ওকে ভোট না দিলে ফল ভালো হবে না ৷ আমি ছেলের দিব্যি দিয়ে ওকে বলেছিলাম, আমরা পরিবারের সবাই ওকেই ভোট দেব ৷ আমরা ওকেই ভোট দিয়েছি ৷ কিন্তু ও বিশ্বাসই করছে না ৷ ভোটের পর একদিন আমার বাড়িতে আসে অরুণ ৷ সেদিনও সবার সামনে ছেলের মাথায় হাত রেখে দিব্যি খেয়ে ওকে বলেছিলাম, আমরা ওকেই ভোট দিয়েছি ৷ কিন্তু তারপর থেকে ওরা আমাদের উপর অত্যাচার চালিয়েই যাচ্ছে ৷ প্রধানের কাছে নালিশ জানিয়েছিলাম ৷ পরদিন ফের ওরা আমাকে মারধর করেছিল ৷ এভাবেই চলছিল ৷ আমাকে, আমার মেয়েকে, এমনকী দুই নাতনিকে বেধড়ক পেটায় ৷ বাড়িতে তালা মেরে দেয় ৷ খবর পেয়ে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে ৷ সুস্থ হওয়ার পর অরুণ-সহ 15 জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ কিন্তু ওর ভয়ে আমরা বাড়ি ঢুকতে পারছি না৷ গতকাল সাহস করে বাড়ি গিয়েছিলাম ৷ সঙ্গে সঙ্গে হামলা শুরু করে ৷ মেয়ে আড় নাতনিদের ধর্ষণ করার হুমকি দিচ্ছে ৷ প্রাণ হাতে নিয়ে কোনওভাবে পালিয়ে এসেছি ৷”