মালদা, 7 জুন : করোনার দাপট অব্যাহত ৷ এগিয়ে আসছে তৃতীয় ঢেউ ৷ জীবন বাঁচাতে টিকাই সম্বল বলে বারবার বার্তা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরাও ৷ মালদা জেলায় টিকাকরণের হারও আশাপ্রদ ৷ এখন 18 থেকে 44 বছর বয়সীদেরও টিকা দেওয়া হচ্ছে জেলায় ৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও আগামী তিন থেকে চারমাসের মধ্যেও প্রতিটি জেলাবাসী টিকা পাবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে খোদ প্রশাসনেরই ৷ এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়েছে, অ্যাপের মাধ্যমে সবাইকে টিকা নিতে হবে ৷ টিকা নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের প্রথমে নিজেদের স্মার্টফোনে কো-উইন অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে ৷ সেখানে নির্দিষ্ট জায়গায় ইচ্ছুকদের নাম ও সচিত্র পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে ভ্যাকসিন স্লট নিতে হবে ৷ নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের কোভিড ভ্যাকসিন নিতে হবে ৷
সমস্যা অন্য জায়গায় ৷ পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে মাত্র 42 শতাংশ ভারতবাসী স্মার্টফোন ব্যবহার করেন ৷ 2025 সাল নাগাদ সেই হিসাবটা 51 শতাংশে দাঁড়াতে পারে ৷ তবে গত এপ্রিল পর্যন্ত দেশের 86.66 শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছেন ৷ অর্থাৎ 44 শতাংশের বেশি সংখ্যক মানুষের হাতে এখনও স্মার্টফোন নেই ৷ ফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে গ্রামীণ এলাকার প্রায় 59 শতাংশ মানুষও রয়েছে ৷ প্রশ্ন উঠেছে, যাঁদের এখনও মোবাইল ফোন নেই, অথবা মোবাইল ফোন থাকলেও স্মার্টফোন নেই তাঁরা কী করে ভ্যাকসিন নেবেন ৷ আবার এমনও অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁদের স্মার্টফোন থাকলেও তার ব্যবহার জানেন না ৷ অনেকেই ততটা শিক্ষিতও নন ৷ তাঁরাই বা কীভাবে ভ্যাকসিন নেওয়ার এই জটিল প্রক্রিয়া পেরোতে পারবেন ৷ উত্তর জানা নেই কারও ৷
সমস্যা আর সমাধানের রাস্তা খুঁজতে যাওয়া হয়েছিল পুরাতন মালদার আমতলা গ্রামে ৷ গ্রামে আদিবাসী মানুষের সংখ্যা বেশি ৷ এখন তাঁদের অনেক ছেলেমেয়েই বই-খাতার গন্ধ শোঁকে ৷ তবে এখনও অনেকেই অশিক্ষার অন্ধকারে ৷ গ্রামের বাসিন্দা জিতেন কুড়োল মহারাষ্ট্রে শ্রমিকের কাজ করেন ৷ করোনাকালে মাস তিনেক আগে বাড়ি এসে আর কাজের জায়গায় ফিরতে পারেননি ৷ তিনি মহারাষ্ট্রেই ভ্যাকসিন পেয়েছেন ৷ কিন্তু বাড়ির বাকি ছ'জন পাননি ৷ তিনি বলেন, "কোম্পানি থেকে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করায় আমি তা নিতে পেরেছি ৷ এখন শুনছি মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে সবাইকে টিকা নিতে হবে ৷ আমার স্মার্টফোন নেই ৷ কীভাবে বাড়ির লোকজন ভ্যাকসিন নেবে জানি না ৷ সরকারের তরফে গ্রামের স্কুলে ক্যাম্প করে সবাইকে টিকা দেওয়া হলে ভাল হয় ৷"