পণের দাবি না মানায় বধূকে খুন মালদা, 5 মে: পণের দাবিতে গৃহবধূকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে ৷ ঘটনায় শুক্রবার সকাল থেকেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদার চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের ক্ষেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজলি গ্রামে ৷ খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে চাঁচল থানার পুলিশ ৷ মৃত বধূর নাম কোহিনুর খাতুন (22)৷ ঘটনার পর থেকেই পলাতক শ্বশুর-শাশুড়ি ও তাঁদের দুই মেয়ে ।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে বিজলি গ্রামের যুবক শাহাবুল হকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার খোপাকাঠি গ্রামের মেয়ে কোহিনুর খাতুনের প্রেম ছিল বহুদিনের। এরপরে পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় তাঁদের । শাহাবুল পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ৷ প্রায় তিন মাস ধরে বেঙ্গালুরুতেই কর্মরত তিনি ৷ এখনও পর্যন্ত তাঁদের কোনও সন্তান হয়নি ৷ অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে কোহিনুরের উপর অত্যাচার চালাতেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ৷ কিন্তু বারবার মেয়ের শ্বশুরবাড়ির দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি কোহিনুরের বাবা-মায়ের পক্ষে। এরপর শুক্রবার কোহিনুরের বাড়িতে ফোন করে জানানো হয়, মেয়ে মারা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত পণের দাবিতে যুবতিকে পুড়িয়ে খুন, গ্রেপ্তার শাশুড়ি
কোহিনুরের জামাইবাবু শামিম আখতার অভিযোগ করে বলেন, "গতকাল রাতে আমার শ্যালিকা ফোনে মা আর বোনের সঙ্গে কথা বলছিলেন ৷ কেন ও মা-বোনের সঙ্গে কথা বলবে, তা নিয়েই ওঁর উপর অত্যাচার শুরু করে দেন শ্বশুর-শাশুড়ি ৷ এরপর ওঁরা শ্যালিকাকে মেরে ফেলে ৷ শুক্রবার সকালে গ্রামের লোকজন ফোন করে জানায়, কোহিনুর মারা গিয়েছে ৷ বিয়ের পর থেকে প্রতি মাসেই ওঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন কোনও না কোনও পণ দাবি করতে থাকে ৷ কখনও 10 হাজার, কখনও বা 50 হাজার টাকার দাবি করত ৷ এমনকী জমি কেনার টাকাও দাবি করত ৷ বিয়ের সময় ওঁদের চার লাখ টাকা পণ দেওয়া হয়েছিল ৷ বারবার অত টাকা কোথায় থেকে দেওয়া যাবে ! এসব নিয়ে পারিবারিক অশান্তি ছিলই ৷ বেশ কয়েকবার গ্রামে সালিশি সভাও হয়েছে ৷ জামাই বাইরে থাকে ৷ মা অসুস্থ বলে স্ত্রীকে সেখানে নিয়ে যায় না ৷ শ্যালিকাকে খুনের পিছনে ওঁর বাবা-মা আর দু'বোনের হাত রয়েছে ৷ আমরা এই ঘটনার যথাযথ পুলিশি তদন্ত দাবি করছি ।"
ক্ষেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহম্মদ ওবাইদুর রহমান ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন । তিনি জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক ৷ কোহিনুর খাতুন নামে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ এদিন সকালে উদ্ধার হয়েছে ৷ খবর পেয়ে মেয়ের বাবা এসেছিলেন ৷ তাঁর দাবি, তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে ৷ প্রধান হিসাবে তিনি এই ঘটনার যথাযথ তদন্তের জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করেছেন ৷