মালদা ও উত্তর দিনাজপুর, 8 এপ্রিল: নেপথ্যে জমি সংক্রান্ত বিবাদই ৷ তারই জেরে পাশের জেলায় গলা কেটে খুন করা হয়েছে কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লকের আলিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের জোতপরম চামাটোলার মোস্তাক শেখকে ৷ শুধু ভিনজেলার পুলিশই নয়, এই ধারণা নিহতের স্ত্রীরও ৷ মোস্তাকের খুনিদের দ্রুত গ্রেফতারিতে হস্তক্ষেপ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও ৷ মন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে তৎপর হয়েছে পুলিশও ৷
কালিয়াচকের বাসিন্দা 47 বছরের মোস্তাক শেখ পেশায় ছিলেন ফেরিওয়ালা ৷ স্ত্রী সুলতানা খাতুন, 12 বছরের মেয়ে সিদরাতুন নিশা, 10 বছরের ছেলে সাহনওয়াজ কালিমি আর দু'বছরের ছোট মেয়ে রুসেদা পারভিন নিয়েই ছিল তাঁর সংসার ৷ 10-12 বছর ধরে তিনি হেমতাবাদ থানার গ্রামেগঞ্জে মেয়েদের পোশাক-সহ প্লাস্টিক ও ফাইবারের জিনিসপত্র ফেরি করতেন ৷ শুক্রবার সকালে হেমতাবাদের টিটিহি কালীতলা গ্রামে একটি ভুট্টাখেতে তাঁর গলাকাটা দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় ৷ ধর থেকে প্রায় 15 মিটার দূরে পড়ে ছিল কাটা মুণ্ডু ৷ খবর পেয়ে মোস্তাকের ধর ও মুণ্ডু উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ মেডিক্যালে পাঠায় হেমতাবাদ থানার পুলিশ ৷ ওই দিন রাতে মোস্তাককে গ্রামে কবরস্থ করা হয়েছে ৷
দীর্ঘ বছর ধরে হেমতাবাদের বাঙালবাড়ি এলাকার সইফুর রহমানের বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন মোস্তাক ৷ ওই বাড়িতে ভাড়া থাকেন কালিয়াচক ও মোথাবাড়ি এলাকার আরও কিছু ফেরিওয়ালা ৷ গতকাল সকালে সাইকেলে মাল গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েন মোস্তাক ৷ পৌনে সাতটা নাগাদ তাঁকে মহাজনবাড়ি এলাকায় একটি চায়ের দোকানে দেখা গিয়েছিল ৷ সাতটা নাগাদ ফোন করে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন ৷ 7.20 নাগাদ রাস্তায় তাঁকে দেখেন হেমতাবাদ থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার ৷ তারপর থেকেই তাঁকে আর দেখা যায়নি ৷ আটটা নাগাদ কয়েকজন গ্রামবাসী ভুট্টাখেতে তাঁর মুণ্ডহীন দেহ দেখতে পান ৷
ঘটনার তদন্তে নেমে হেমতাবাদ থানার পুলিশের অনুমান, জমি সংক্রান্ত কোনও বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে ৷ কারণ, দীর্ঘ বছর ধরে এলাকায় জিনিস ফেরি করায় মোস্তাক হেমতাবাদে পরিচিত মুখ ৷ কয়েক বছর ধরে তিনি অন্যের জমি ও আম-লিচুর বাগান লিজ নিয়ে চাষ শুরু করেছিলেন ৷ এবারও তিনি বিঘাচারেক লিজের জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছিলেন ৷ সেই জমিতেই তাঁকে খুন করা হয়েছে ৷ তাই এখন খুনের সঙ্গে জমি বিবাদের সূত্র মেলানোর চেষ্টা চালাচ্ছে উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ ৷