মালদা, 10 অক্টোবর: ঠাকুরদা ছিলেন মালদা জেলার প্রখ্যাত পটুয়া সাধুপদ দাস ৷ পটের পাশাপাশি মূর্তি গড়তেও পটু ছিলেন তিনি ৷ বাবা হরিগোপাল দাসও মাটির প্রতিমা বানাতেন ৷ তাই ছোট্ট থেকে কাদামাটির গন্ধে, সেই মাটি নিয়ে খেলতে খেলতে বড় হয়েছেন বিবেক ৷ তবে বাড়িতে মৃৎশিল্প নির্মাণের পরিবেশ থাকলেও ছোট থেকে বড় চিত্রশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন 39 বছরের বিবেক দাস ৷ এই মুহূর্তে তিনি জেলার শিল্প জগতে পরিচিত নাম ৷ তাঁর তৈরি দুর্গামূর্তি বসেছে শহরের ভবানী মোড়ে ৷ ঘুরে দেখলেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি-
জেলার একাধিক চিত্রশিল্পীর সঙ্গে পরিচয় তাঁর ৷ কাজ শেখার সুযোগ আসে জেলার বিখ্যাত চিত্রশিল্পী কৌশিক পোদ্দারের কাছে ৷ এরপর তিনি চলে যান আরেক বিখ্যাত শিল্পী সমীর আইচের কাছে ৷ অনেকগুলো বছর সমীরবাবুর কাছে চিত্রশিল্পের খুঁটিনাটি ব্যাকরণ রপ্ত করেছেন ৷ তারপরেই হাত দিয়েছেন মাটির মূর্তি আর ভাস্কর্যের কাজে ৷ মালদা টাউন রেল স্টেশন থেকে শহরের দিকে ঢুকলেই চোখে পড়বে সেই ভাস্কর্য ৷ এবার দুর্গাপুজোর মণ্ডপেও থাকবেন বিবেক ৷ তাঁর তৈরি ধাতু ও প্লাস্টিক ফাইবারের মূর্তি দেখা যাবে শহরের কুতুবপুর মিস্ত্রিপাড়া সর্বজনীনের পুজো মণ্ডপে ৷ তিনটি মাটির মূর্তিও এবার গড়েছেন ৷
কুতুবপুর মিস্ত্রিপাড়া সর্বজনীনের প্রতিমার জন্য বিবেক এবার লোহা, পিতল, প্লাস্টিক ফাইবার-সহ বেশ কিছু ধাতু ব্যবহার করেছেন ৷ নির্মাণের কাজ অর্ধেকের বেশি হয়ে গিয়েছে ৷ মহালয়ার আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী তিনি ৷ ব্যস্ততার মধ্যেই ঝলঝলিয়া এলাকায় নিজের স্টুডিয়োয় কাজ করতে করতে ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, "ছবি আঁকা আর মূর্তি গড়া, দু'টির মধ্যে একটি জিনিস এক ৷ তা হল শিল্পীর ভাবনা আর তা বাস্তবে রূপ দেওয়া ৷ যিনি শুধুই ছবি আঁকেন, তাঁর পক্ষে ভেজা মাটির তালে কতটা চাপ দিলে কতটা মাটি বাইরে বেরিয়ে আসবে তার হিসাব করা একটু ঝামেলার ৷ আবার যিনি শুধু মূর্তি গড়েন, তাঁর পক্ষে ড্রয়িংয়ের ব্যাকরণ একটু দুরূহ হয়ে উঠতে পারে ৷"