মালদা, 21 অক্টোবর : রাজ্যের সমস্ত পুজো মণ্ডপে "নো এন্ট্রি" ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট । এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদনেও জমা পড়েছে হাইকোর্টে ৷ এরই মধ্যে মালদা জেলাবাসীর সুবিধার জন্য় পুজো গাইড প্রকাশ করল মালদা জেলা পুলিশ প্রশাসন ৷ গত বিকেলে জেলা পুলিশ লাইনে পুজো গাইডের উদ্বোধন করেন জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ও পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ৷ হাইকোর্টের পুজো মণ্ডপগুলিতে ''নো এন্ট্রি'' ঘোষণার পর প্রশাসনের এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানাচ্ছে কি, এই প্রশ্নের জবাবের জন্য তাকিয়ে রয়েছে জেলাবাসী ৷
এ বছর কোরোনা আবহের মধ্যেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো আয়োজিত হচ্ছে ৷ দিনের পর দিন বাড়তে থাকা কোরোনা সংক্রমণের মধ্যেই পুজোকে নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন চিকিৎসকরা ৷ রাজ্যের বিগবাজেটের পুজো বলতে কলকাতার পরেই নাম আসে মালদার ৷ পুজোর পরে এক ধাক্কায় সংক্রমণ অনেকটাই বেড়ে যাবে তা মেনে নিয়েছে জেলা প্রশাসনও ৷ এরই মধ্যে আজ মালদা শহরের দর্শনার্থীদের জন্য পুজো গাইড উদ্বোধন করল মালদা জেলা প্রশাসন ৷ এদিনের অনুষ্ঠানে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি, পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য দুলাল সরকার ও আশিষ কুণ্ডু ৷ উপস্থিত ছিলেন মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা ৷
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “সংবাদমাধ্যমের মধ্য দিয়ে জেলাবাসীকে শারদ শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ৷ মালদাবাসীর সুবিধার্থে পুজো গাইড প্রকাশ করা হচ্ছে ৷ এই পুজো গাইডে শহরের সমস্ত রেজিস্টার্ড পুজোগুলি চিহ্নিত করা আছে ৷ শহরের কোথায় ড্রপ গেট আছে, কোথায় পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ, কোথায় পার্কিং সমস্ত কিছু দেওয়া রয়েছে ৷ এবছর মালদা শহরে মোট 52টি ড্রপ গেট থাকছে ৷ পুজোর দিনগুলিতে দুপুর 3টে থেকে রাত 2 টো পর্যন্ত এই ড্রপ গেট কার্যকর থাকবে ৷ এই সময়ে জরুরি পরিষেবা ছাড়া কেবলমাত্র অনুমতি প্রাপ্ত যানবাহন ওই রুট দিয়ে চলাচল করতে পারবে ৷ দর্শনার্থীদের যানবাহন রাখার জন্য শহরে 4টি পার্কিং জোন করা হয়েছে ৷ সাধারণ মানুষের প্রয়োজনে শহরে 14টি পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ করা হয়েছে ৷ শহরে 9টি পুলিশ ভ্যান ও 17টি মোটরবাইক পেট্রোলিং চালাবে ৷ পাশাপাশি ইভটিজিং রুখতে একটি অ্যান্টি ইভটিজিং স্কোয়াড তৈরি করা হয়েছে ৷ সেই স্কোয়াড শহরের বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন থাকবে ৷”
পুলিশ সুপার আরও বলেন, “পুজো চলাকালীন অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে আন্তরাজ্য ও আন্তজেলা বর্ডারে নাকা চেকিং করা হচ্ছে ৷ পুজোর দিনগুলিতে আরও কড়া নজরদারি চলবে ৷ দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে বাইরে থেকে দুজন DSP পদাধিকারী অফিসার, বেশ কিছু ইনস্পেকটর ও 50 জনের বেশি কনস্টেবল জেলায় এসেছেন ৷ বিসর্জনের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু নিয়ম লাগু করা হয়েছে ৷ পুজো উদ্যোক্তাদের 26 থেকে 28 অক্টোবরের মধ্যে বিসর্জন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ বিসর্জনে কোনওরকম শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়া যাবে না ৷ DJ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ৷ যদি বিসর্জনে DJ ব্যবহার হয় সেক্ষেত্রে ঘটনাস্থল থেকেই DJ বাজেয়াপ্ত করা হবে ৷ বিকেলের মধ্যেই সমস্ত পুজো কর্তৃপক্ষকে বিসর্জন করতে বলা হয়েছে ৷ তবে একই দিনে অনেক পুজো কমিটি বির্সজনে এলে সেক্ষেত্রে লাইনে থাকা পুজো কমিটিগুলিকে সন্ধেয় বিসর্জনে অনুমতি দেওয়া হবে ৷ ঘাটে দুর্ঘটনা এড়াতে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর মোতায়েন থাকবে ৷”