পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

"দল বেইমানি করেছে", তৃণমূল ছাড়লেন মালদা জেলার সাধারণ সম্পাদক

দলত্যাগ জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের ৷ আগামীকাল মেদিনীপুরের সভায় স্বামীর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন গাজোলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস ৷

দিপালী বিশ্বাস ও রঞ্জিত বিশ্বাস
দীপালি বিশ্বাস ও রঞ্জিত বিশ্বাস

By

Published : Dec 18, 2020, 10:01 PM IST

মালদা, 18 ডিসেম্বর : তবে কি আগামীকালই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন গাজোলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস ৷ এখনও তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা না জানালেও আজ তাঁর স্বামী, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত বিশ্বাস দলের সংস্রব ত্যাগ করেছেন ৷ হোয়াটস‌অ্যাপে তিনি সেই বার্তা জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুরকেও পাঠিয়ে দিয়েছেন ৷ যদিও মৌসমের দাবি, তিনি রঞ্জিতবাবুর তরফে এমন কোনও বার্তা পাননি ৷ তবে আজ তাঁর সঙ্গে রঞ্জিতবাবুর ফোনে কথা হয়েছে ৷ তিনি তাঁর কিছু ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন ৷ আলোচনার মাধ্যমে তাঁর ক্ষোভ মিটিয়ে ফেলা হবে ৷ তবে মৌসম যাই বলুন না কেন, রাজনৈতিক মহলের ধারণা, রঞ্জিতবাবু তো বটেই, তাঁর সঙ্গে বিধায়ক স্ত্রী দীপালিরও বিজেপিতে যোগ শুধু সময়ের অপেক্ষা ৷ জল্পনা আরও গাঢ় হয়েছে এই মুহূর্তে দু’জন কলকাতায় থাকায় ৷ প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি আগামীকাল মেদিনীপুরের সভাতেই অমিত শাহের হাত থেকে গেরুয়া ঝান্ডা ধরছেন তৃণমূলের এই নেতা-নেত্রী ৷

আরও পড়ুন : তৃণমূল ছাড়লেন বিধায়ক বনশ্রী মাইতি

রঞ্জিতবাবু একসময় ছিলেন সিপিএমের গাজোল জ়োনের সম্পাদক ৷ ষোলোর বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর স্ত্রী দীপালি বিশ্বাসকে টিকিট দেয় দল ৷ ভোটে জেতার পরেই 21 জুলাই ধর্মতলায় ঘাসফুলের ঝান্ডা ধরেন দীপালিদেবী ৷ এর পিছনে ছিল শুভেন্দু অধিকারীর হাত ৷ কিছুদিনের জন্য তাঁকে শাসকদলের গাজোল ব্লক সভানেত্রীর পদও দেওয়া হয় ৷ কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে দলে প্রভাব কমতে শুরু করে বিশ্বাস দম্পতির ৷ তাই শেষ পর্যন্ত দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন রঞ্জিতবাবু ৷ আজ মৌসম নুরকে দেওয়া বার্তায় তিনি লিখেছেন, 2016 সালের 21 জুলাই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সময় তাঁকে অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ৷ তার একটিও এখনও পর্যন্ত পূরণ করা হয়নি ৷ বর্তমানে দলে তাঁর কোনও সম্মান নেই ৷ তিনি মনে করছেন, দল তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে ৷ তাই তিনি দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ৷

দীপালি বিশ্বাস, গাজোলের বিধায়ক

আরও পড়ুন : ‘‘দলের বোঝারা দল ছাড়ছে’’, কোর কমিটির বৈঠকে বললেন মমতা


কলকাতা থেকে রঞ্জিতবাবু জানান, "তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সময় আমি তাদের কাছে ন’টি শর্ত রেখেছিলাম ৷ তার মধ্যে প্রধান ছিল, গাজোলকে পৌরসভা হিসাবে ঘোষণা করা ৷ কিন্তু ন’টি শর্তের মধ্যে একটিও পূরণ করা হয়নি ৷ কিছুদিনের জন্য স্ত্রীকে দলের গাজোল ব্লক সভাপতি করা হয়েছিল ৷ কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে সেটাও কেড়ে নেওয়া হয় ৷ তৃণমূল আমার সঙ্গে বেইমানি করেছে ৷ সম্মান নিয়ে আর এই দল করা যায় না ৷ তাই আজ আমি তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে পদত্যাগ করেছি ৷ হোয়াটসঅ্যাপে সেই বার্তা দলের জেলা সভানেত্রীকেও পাঠিয়ে দিয়েছি ৷"

আরও পড়ুন : 2 দিনের ঠাসা কর্মসূচি নিয়ে আজ রাজ্যে অমিত

যদিও তাঁর সঙ্গে তাঁর বিধায়ক স্ত্রী পদত্যাগ করছেন কি না, সেব্যাপারে কিছু বলতে চাননি রঞ্জিতবাবু ৷ তবে দীপালিদেবী বিজেপিতে যোগ দিলেও তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার উপায় নেই ৷ কারণ, খাতায় কলমে এখনও তিনি সিপিএম বিধায়ক ৷ আজ ফোন ধরেননি বিধায়ক ৷

যদিও রঞ্জিতবাবুর পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা অস্বীকার করে মৌসম বলেন, "তাঁরা এখনও দলে রয়েছেন ৷ আমার আশা, তাঁরা ভবিষ্যতেও দলে থাকবেন ৷ রঞ্জিতবাবুর কিছু ক্ষোভ রয়েছে ৷ তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হবে ৷ কেউ দল ছেড়ে বেরিয়ে যাক, তা আমরা কখনই চাই না ৷" যদিও গাজোল ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক প্রসাদ রঞ্জিতবাবুর দলত্যাগে অস্বাভাবিক কিছু খুঁজে পাচ্ছেন না ৷ তিনি জানিয়েছেন, "বেশ কিছুদিন ধরেই রঞ্জিতবাবু ও তাঁর স্ত্রীর আচরণ অন্যরকম লাগছিল ৷ তাতেই আমাদের ধারণা হয়েছিল, তাঁরা অন্য দলে যাওয়ার সুযোগ খুঁজছেন ৷ তবে তাঁরা দল ছেড়ে চলে গেলেও কোনও ক্ষতি হবে না ৷ এলাকায় তাঁদের তেমন কোনও প্রভাবও নেই ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details