পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বাঁধ কাটছে মহানন্দা, দুশ্চিন্তায় নদীপাড়ের মানুষ - সাবিনা ইয়াসমিন

ফুলে ফেঁপে উঠেছে প্রতিটি নদী ৷ তাতেই আতঙ্ক বাড়ছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের ৷ চাঁচলে মহানন্দার পাশে থাকা গালিমপুর, যদুপুর, ভবানীপুর, শ্রীপতিপুর-সহ একাধিক গ্রামে এখন আশঙ্কার প্রহর গোনা চলছে ৷

mahananda riverbank people is in trouble because of erosion
বাঁধ কাটছে মহানন্দা, দুশ্চিন্তায় নদীপাড়ের মানুষ

By

Published : Jun 23, 2021, 6:33 PM IST

মালদা, 23 জুন : ‘নদীর পাড়ে বাস, চিন্তা বারোমাস’৷ এই প্রবাদ বেশ ভালই টের পাচ্ছে চাঁচলের মহানন্দা নদীর পাড়ে বসবাস করা মানুষ ৷ বর্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে মহানন্দা পাড় কাটতে শুরু করেছে ৷ বাঁধেও দেখা দিয়েছে ফাটল ৷ পাড়ে থাকা বাড়িঘর যে কোনও মুহূর্তে তলিয়ে যেতে পারে নদীতে ৷ সেই আশঙ্কায় প্রতিটি রাত পার করছেন স্থানীয়রা ৷ এখন রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী এই জেলার মানুষ ৷ সমস্যা সমাধানে তাঁর হস্তক্ষেপের আর্জি জানাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন থেকে শুরু করে এলাকার বিধায়কও ৷

যশের প্রভাবে এবার বঙ্গে আগেই এসেছে বর্ষা ৷ বিশেষ করে উত্তরের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির বিরাম নেই ৷ ফুলে ফেঁপে উঠেছে প্রতিটি নদী ৷ তাতেই আতঙ্ক বাড়ছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের ৷ চাঁচলে মহানন্দার পাশে থাকা গালিমপুর, যদুপুর, ভবানীপুর, শ্রীপতিপুর-সহ একাধিক গ্রামে এখন আশঙ্কার প্রহর গোনা চলছে ৷ কারণ, নদীর প্রবল স্রোতে ভাঙতে শুরু করেছে বাঁধ ৷ ধীরে ধীরে নদীগর্ভে যেতে শুরু করেছে বাঁধের বোল্ডার ৷ নদীর জল আরও বাড়লে দুর্বল বাঁধ যে যুঝতে পারবে না, তা বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছেন সবাই ৷ তেমন হলে কিন্তু এবারই নদীতে মিলিয়ে যেতে পারে গোটা পঞ্চাশেক বাড়ি ৷

নদীপাড়ের মোক্তারি বিবির মনে এখনও সতেরোর বন্যার স্মৃতি জ্বলজ্বল করছে ৷ তিনি জানান,"বাঁধ কেটে যাচ্ছে ৷ নদীর জলও বাড়ছে ৷ আতঙ্কে রয়েছি ৷ কখন কী হয় জানি না ৷" একই বক্তব্য সায়েদা বিবিরও ৷ তিনি বলেন, "গত বছর থেকেই নদী বাঁধ কাটছে ৷ বাঁধের অবস্থা ভাল নয় ৷ আমার ছেলেটার ঘরের কোণায় নদী চলে এসেছে ৷ সব বোল্ডার নদীতে চলে গিয়েছে ৷ বাঁধ ভাঙলে বাড়িঘর সব চলে যাবে ৷ আমরা ত্রাণ চাই না, কাজ চাই ৷"

গালিমপুরের বাসিন্দা দীপককুমার সিংহ বলেন, "2012 সালে এখানে নদীর পাড়ে বোল্ডার পিচিং-এর কাজ হয়েছিল ৷ তৎকালীন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সাবিনা ইয়াসমিনই তার উদ্যোগ নিয়েছিলেন ৷ কিন্তু তারপর থেকে আজ পর্যন্ত বাঁধের কোনও সংস্কার হয়নি ৷ ফলে এখন গোটা গালিমপুর ভাঙনের আতঙ্কে ভুগছে ৷ নদী ফের ভরে উঠছে ৷ যেটুকু বোল্ডার এখনও বেঁচে আছে, সেটাও এবার নদীগর্ভে চলে যাবে ৷ এ-নিয়ে আমরা প্রশাসন ও বিধায়কের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ৷ সাবিনা ইয়াসমিন এখন রাজ্যের মন্ত্রী ৷ তিনি সেচ দফতরের দায়িত্বেও রয়েছেন ৷ গালিমপুর গ্রামের আবাদি জমি, বাড়িঘর, এমনকি এই গ্রামটাকে রক্ষা করার জন্য তাঁর হস্তক্ষেপের আর্জি জানাচ্ছি ৷"

বাঁধ কাটছে মহানন্দা, দুশ্চিন্তায় নদীপাড়ের মানুষ

আরও পড়ুন : শুকিয়ে যাওয়া মহানন্দার শাখানদী বুজিয়ে বহুতল নির্মাণ

চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষও সমস্যা সমাধানে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন ৷ তিনি বলেন, "এবার বর্ষা আগে চলে এসেছে ৷ এবার বৃষ্টিও বেশি ৷ ইতিমধ্যে আমি ভাঙন প্রবণ এলাকা নিয়ে সেচ দফতরের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছি ৷ সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী মালদার ৷ তাঁকেও রিপোর্ট করেছি ৷ গতকালও আমি তাঁকে বিষয়টি জানিয়েছি ৷ তিনি খুব তাড়াতাড়ি সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসবেন ৷ মানুষের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তার ব্যবস্থা নিশ্চয়ই তিনি করবেন ৷ আমরাও সেদিকে লক্ষ্য রাখছি ৷ এর মধ্যেই আমি ওই এলাকা পরিদর্শনে যাব ৷ তবে নিজের অভিজ্ঞতায় জানি, নদীতে জল বাড়লে ভাঙনের প্রকোপ কমে যায় ৷ অল্প জলেই ভাঙন বেশি হয় ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details