মালদা, 4 মে : লকডাউনে কর্মহীন বহু মানুষ ৷ খাদ্য সংগ্রহ করতে প্রয়োজন অর্থ ৷ রোজগারের জন্য বাড়ির পোষ্য বিক্রি করছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজন ৷ দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অনাহারে দিন কাটানোর আশঙ্কায় রয়েছে দুস্থ পরিবারগুলি ৷
কোরোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন ৷ আজ থেকে শুরু তৃতীয় দফার লকডাউন ৷ চলবে 17 মে পর্যন্ত ৷ টানা একমাসের লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলি ৷ সরকার ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি খাদ্যসামগ্রী বিলি করলেও তা পর্যাপ্ত নয় ৷ এই পরিস্থিতিতে পেটের খিদে মেটাতে বাড়ির পোষা হাঁস, মুরগি, ছাগল পর্যন্ত বিক্রি করতে হচ্ছে দুস্থদের ৷ সেই পয়সা দিয়েই খাদ্যসামগ্রী কিনছেন তাঁরা ।
পুরাতন মালদার মঙ্গলবাড়ি পঞ্চায়েতের নলডুবি এলাকায় ক'দিন এমনই ছবি ধরা পড়ছে । নলডুবি এলাকার বাসিন্দা প্রবীণা গুরুওয়ারি মণ্ডল বলেন, "আমার স্বামী কয়েক বছর আগে মারা গেছেন ৷ বাড়িতে দুই মেয়ে, এক ছেলে ৷ ছেলে ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করত ৷ লকডাউনে ইটভাটার কাজ বন্ধ ৷ হাতে যা টাকা-পয়সা ছিল সব শেষ ৷ বাড়িতে মজুত থাকা খাদ্যসামগ্রীও শেষ হয়েছে ৷ বাধ্য হয়ে বাড়িতে পোষা হাঁস, মুরগি, ছাগল বিক্রি করতে হচ্ছে ৷ পাইকাররা কিছু পয়সার বিনিময়ে আমাদের থেকে এসব নিয়ে যাচ্ছে ৷ আমার ন'টা ছাগল ও কয়েকটা মুরগি ছিল ৷ টাকার জন্য সব বিক্রি করে দিয়েছি ৷ সেই টাকা দিয়ে অন্তত খেতে তো পাব ।"
একই বক্তব্য নলডুবি এলাকার আরেক বাসিন্দা সুকান্ত মণ্ডলেরও ৷ তিনি বলেন, “লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ ৷ টাকার অভাবে খাদ্যসামগ্রী কিনতে পারছি না ৷ এলাকার কয়েকজনের কাছে জানতে পারি, স্থানীয় পাইকাররা হাঁস, মুরগি কিনছেন ৷ স্থানীয়দের মাধ্যমে পাইকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কয়েকটি মুরগি বিক্রি করেছি ৷ সেই পয়সা দিয়েই সংসার চলছে ৷ লকডাউন না উঠলে আর যে কটি মুরগি রয়েছে তাও বিক্রি করতে হতে পারে ৷”