পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

লাফিয়ে বাড়ছে কোরোনা সংক্রমিতের সংখ্যা, বন্ধ ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার

সরকারি উদ্যোগে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে পরিযায়ী শ্রমিকরা ৷ অন্যান্য জায়গার সঙ্গে মালদা জেলাতেও বাড়ছে ভিনরাজ্য থেকে আসা শ্রমিকের সংখ্যা ৷ এই পরিস্থিতিতে মালদা জেলার 15টি ব্লকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার ৷ এতে কোরোনা মোকাবিলায় সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে জেলাবাসী ৷

institutional quarantine centers closed
institutional quarantine centers closed

By

Published : May 10, 2020, 9:22 PM IST

মালদা, 10 মে : সরকারি উদ্যোগে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে পরিযায়ী শ্রমিকরা ৷ অন্যান্য জায়গার সঙ্গে মালদা জেলাতেও বাড়ছে ভিনরাজ্য থেকে আসা শ্রমিকের সংখ্যা ৷ শনিবার রাতে আরও তিন পরিযায়ী শ্রমিকের দেহে কোরোনা ভাইরাস পজ়িটিভ পাওয়া গিয়েছে ৷ সব মিলিয়ে এই জেলায় কোরোনা সংক্রমিতের সংখ্যা 13 ৷ এরই মধ্যে তেলাঙ্গানা থেকেও মালদার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে শ্রমিকরা ৷ তারা ফিরলে জেলার কোরোনা পরিস্থিতির চিত্রটা আরও বদলাবে বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসনিক মহলের একাংশও ৷ এই পরিস্থিতিতে জেলার 15টি ব্লকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার ৷ এতে কোরোনা মোকাবিলায় সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে জেলাবাসী ৷ যদিও এ'বিষয়ে কুলুপ এঁটেছে জেলা প্রশাসন ৷

সম্প্রতি রাজস্থানের আজমেঢ় থেকে মালদায় ফিরেছে 273 জন পরিযায়ী শ্রমিক৷ তার আগে কোটা থেকে মালদায় ফিরেছিল প্রায় 250 জন পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকরা ৷

এই মুহূর্তে জেলার যে 13 জন কোরোনা সংক্রমিত, তার মধ্যে 10 জন হরিশচন্দ্রপুর 1 ব্লকের ৷ প্রত্যেককেই পুরাতন মালদার নারায়ণপুরে তৈরি COVID হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে ৷ গোটা জেলায় 6টি কনটেইনমেন্ট জ়োন রয়েছে । এর তিনটিই হরিশচন্দ্রপুর 1 ব্লকে ৷ কিন্তু, হরিশচন্দ্রপুরের বাসিন্দাদের প্রশ্ন অন্য জায়গায় ৷ যখন জেলায় কোরোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তখন কেন ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারানটিনসেন্টারগুলি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে? প্রশ্ন তাদের ।

মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ সামিউন বলেন, “আমাদের এলাকার পরিস্থিতি এখন ভীষণ খারাপ ৷ পাশের গ্রামেই কোরোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে ৷ স্বাভাবিকভাবেই এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের হোম কোয়ারানটিনে থাকতে বলা হয়েছিল ৷ কিন্তু এরা সে'কথায় কোনও তোয়াক্কা করেনি ৷ বাজার থেকে রেশন, দোকান, সব জায়গায় গিয়েছে ৷ তারপর তাদের নমুনায় কোরোনা ভাইরাস মিলেছে ৷ ভয়ে আমরা নিজেদের গ্রাম বন্ধ করে দিয়েছি ৷ ওই গ্রামের কাউকে আর আসতে দেওয়া হবে না ৷ আমাদের প্রশ্ন, যখন জেলায় এভাবে কোরোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তখন রাজ্য সরকার কেন ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার বন্ধ করে দিল? সরকারি কোয়ারানটিন সেন্টার তুলে দেওয়ার জন্যই এই সমস্যা হয়েছে ৷ তা না হলে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 ব্লকে কোনও সমস্যাই হত না ৷ রাজ্য সরকারের গাফিলতিতেই আজ এলাকার এই অবস্থা ৷ সরকারি কোয়ারান্টিন সেন্টার না খোলা হলে মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাবে ৷ ভোটের জন্য ভিনরাজ্য থেকে শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে ৷ কিন্তু এই শ্রমিকদের কোয়ারানটিনসেন্টারে রাখার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ৷ তারা কি কোরোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে জানে না ? এখন এই পরিস্থিতির দায় কে নেবে?”

একই বক্তব্য ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা আলমগির হোসেনের ৷ তিনি বলেন, “কোরোনা সংক্রমণ রুখতে প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ ৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের সরকারি কোয়ারানটিন সেন্টারে রাখার জন্য BDO-র কাছে আর্জি জানিয়েছিলাম ৷ তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এতে সরকারের অনুমতি নেই ৷ পরিযায়ীরা ঘরে ফেরার পর কোরোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন ৷ এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে?”

রামপুর গ্রামের বাসিন্দারা পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করলেও এ'নিয়ে মুখে কুলুপ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের ৷ তবে হরিশ্চন্দ্রপুর 1-এর BDO অনির্বাণ বসু জানিয়েছেন, "পরিযায়ী শ্রমিকদের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টারে রাখা হলে সংক্রমণ আরও ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল ৷ এলাকায় ফিরে আসা প্রত্যেক পরিযায়ীকে 14 দিন বাধ্যতামূলকভাবে হোম কোয়ারানটিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু সেই নির্দেশিকা অনেকেই মানেনি ৷ তবে প্রয়োজন পড়লে ফের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার খোলা হবে ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details