মালদা, 3 জানুয়ারি: দুই বন্ধু ৷ একজন বি'টেক ইঞ্জিনিয়ার, অন্যজন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা ৷ দু’জনেই একসঙ্গে মালদার গনি খান চৌধুরি ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে পড়াশোনা করেছেন ৷ দু’জনেই কালিয়াচকের বাসিন্দা ৷ দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করেছেন কোনও চাকরির ৷ তাহলে দুই বন্ধুর নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে অনেকটা আর্থিক সুরাহা হত ৷ শত চেষ্টাতেও চাকরি জোটেনি কারও ৷ তাই শেষ পর্যন্ত তাঁরা মালদা শহরের ঝলঝলিয়া এলাকায় খুলে ফেলেছেন চায়ের দোকান ৷ দোকানের নাম ‘বিটেক চা-ওয়ালা’ (Two B.Tech passed Runs Tea Stall in Malda) ৷
1 জানুয়ারি উদ্বোধন হয়েছে দুই ইঞ্জিনিয়ারের চায়ের দোকানের ৷ এখনও তেমন প্রচার পাননি তাঁরা ৷ মঙ্গলবার হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যেই সকাল সকাল কালিয়াচক থেকে নতুন দোকান খুলতে চলে এসেছেন তাঁরা ৷ দুই বন্ধুর একজন আলমগীর খান, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি'টেক ৷ অন্যজন রাহুল আলি ৷ তিনি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমাধারী ৷ দোকানের ঝাঁপ খুলেই মুখোমুখি হয়েছেন ইটিভি ভারতের ৷ কথায় কথায় বেরিয়ে এসেছে অনেক তথ্য ৷
আলমগীর (Alamgir Khan) বলেন, “প্রথমে জিকেসিআইইটি থেকে সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা কোর্স করেছি ৷ তারপর কলকাতার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি'টেক ৷ এই জার্নিটা আমার পক্ষে খুব কষ্টকর ছিল ৷ একসময় সার্টিফিকেটের জন্য জিকেসিআইইটিতে বহু আন্দোলনও করতে হয়েছে ৷ যখন সার্টিফিকেট পেলাম, তখন বয়স অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে ৷ বি'টেক পাশ করার পর একাধিক চাকরির অফারও পেলাম ৷ কিন্তু সবই 12 থেকে 20 হাজার টাকা মাসিক বেতনে ৷ সেটাও আবার ভিনরাজ্যে ৷ সম্প্রতি রাজকোটের একটি প্রতিষ্ঠানে 12 হাজার টাকার চাকরির অফার পেয়েছি ৷ কিন্তু ওই টাকায় রাজকোটে গিয়ে কাজ করা অসম্ভব ৷ এরই মধ্যে আমরা এই রাজ্যে এমবিএ চা-ওয়ালার (Inspired By MBA Chaiwala) দোকান দেখেছি ৷ তাঁকে দেখে আমরা অনুপ্রেরণা পেয়েছি ৷ তাই আমরা দুই বন্ধুও চায়ের দোকান খুলে ফেললাম ৷”
আলমগীর আরও বলেন, “এই রাজ্যে সরকারি কলকারখানা নেই বললেই চলে ৷ যে কয়েকটি কারখানা চলছে, সবই বেসরকারি ৷ সেখানেও চাকরির সুযোগ প্রায় নেই ৷ এখন অলিগলিতে ইঞ্জিনিয়ার ৷ তাই বেসরকারি সংস্থাগুলি এখন 30 হাজার টাকার মাসিক বেতনে একজন ইঞ্জিনিয়ারের জায়গায় ওই টাকাতেই তিনজনকে নিয়োগ করছে ৷ এতে তাদের ফায়দা হচ্ছে ৷ গোটা দেশে এখন 47 শতাংশ ইঞ্জিনিয়ার বেকার ৷ অনেকে আত্মহত্যা করতেও বাধ্য হয়েছেন ৷ কেন্দ্রের তরফে দু’কোটি চাকরির কথা বলা হচ্ছে ৷ কিন্তু কোথায় গেল সেই চাকরি ? রেল কিংবা অন্যান্য কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানেও সেভাবে নিয়োগ হচ্ছে না ৷”