মালদা, 12 জানুয়ারি : পারিবারিক বিবাদের জেরে স্ত্রীকে হাঁসুয়া দিয়ে গলা কেটে খুনের অভিযোগ গ্রেপ্তার ব্যক্তি ৷ মানিকচক থানার উগরিটোলা গ্রামের ঘটনা ৷ মৃতার ছেলে বাবার বিরুদ্ধে মানিকচক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ৷ ঘটনার পর পলাতক ছিল অভিযুক্ত ৷ পরে মানিকচকের ডোমহাট এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করেছে পুলিশ ৷ আদালত পনেরো দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে ৷
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম চন্দনা রায় (39) ৷ স্বামী ঝন্টু রায় দিনমজুর ৷ তবে সম্প্রতি সে কোনও কাজ করত না ৷ তাদের দুই ছেলে, এক মেয়ে ৷ মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে ৷ অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই টাকা-পয়সা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা হত ঝন্টুর ৷ মৃতা চন্দনা রায় বিড়ি বাঁধার কাজ করতেন ৷ অভিযোগ, এরপরেও তাঁর উপর বাড়তি আয়ের জন্য চাপ দিত ঝন্টু ৷ ঘটনার কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে নিয়ে বাবা-মায়ের কাছে আসেন মেয়ে জয়শ্রী ৷ তাঁর উপস্থিতিতেই স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা বাধে ঝন্টুর ৷ এরপরই সে হাঁসুয়া দিয়ে গলা কেটে চন্দনাকে খুন করে বলে অভিযোগ ৷
বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেন মৃতার মেয়ে ৷ আরও পড়ুন:স্বামীকে খুনের অভিযোগ যুবতির বিরুদ্ধে
জয়শ্রী জানান, "বাবা কোনও কাজ করত না ৷ কোনও নেশাও নেই ৷ কিন্তু, নিয়মিত মায়ের সঙ্গে ঝামেলা করত ৷ আমরা অনেকবার বুঝিয়েছি ৷ কাজ হয়নি ৷ গতকাল রাতে আমি বাচ্চাকে নিয়ে ঘরে টিভি দেখছিলাম ৷ ভাইরা ক্লাবে খেলতে গেছিল ৷ মা সিঁড়ির পাশে বসে রুটি বানাচ্ছিল ৷ হঠাৎই ভারি কিছু পড়ার আওয়াজ পাই ৷ ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি, বাবা দৌড়ে পালাচ্ছে ৷ এগিয়ে গিয়ে দেখি, সিঁড়ি দিয়ে মা গড়িয়ে পড়ছে ৷ দৌড়ে গিয়ে মা’কে ধরি ৷ তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছে মা ৷ আমার চিৎকারে পড়শিরা ছুটে আসে ৷"
ঘটনার পর তড়িঘড়ি চন্দনা রায়কে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, তিনি মৃত ৷
মৃতার ভাই বদ্রীনারায়ণ রায় বলেন, "জামাইবাবু কোনও কাজ করত না ৷ সংসারের খরচ দিত না ৷ ছেলেগুলোকে পড়ানোর টাকাও দিত না ৷ দিদি তার কাছে টাকা চাইলে অশান্তি বাধাত ৷ দিদিই বিড়ি বেঁধে সংসার চালাত ৷ গতকাল কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়েই গলা কেটে দিদিকে খুন করেছে জামাইবাবু ৷ আমরা ওর কঠোর শাস্তি দাবি করছি ৷"
মানিকচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার স্বামীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ পলাতক অভিযুক্তকে মানিকচকের ডোমহাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ আদালত পেশ করলে বিচারক পনেরো দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷