মালদা, 23 নভেম্বর : 2017 সালের বন্যাত্রাণ কেলেঙ্কারিতে নয়া মোড় । ত্রাণের টাকা আত্মসাতের মামলায় জামিন পেয়েই বিডিও- সহ প্রশাসনের একাংশ, এমনকি দলের একাংশের বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লক পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য (Harishchandrapur Block 1 Panchayat member alleges BDO of relied fund corruprion) । তাঁর অভিযোগ, মাস্টার রোলে তাঁর স্বাক্ষর জাল করা হয়েছিল । এই ঘটনায় ফের শোরগোল পড়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরে । যদিও বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন বলে এড়িয়ে গিয়েছেন বিডিও এবং জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র ।
2017-য় উত্তর মালদায় ভয়াবহ বন্যা (2017 Malda Flood) হয় । তার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকে কম ক্ষতিগ্রস্তদের 3 হাজার 300 টাকা এবং বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের 70 হাজার টাকা করে বরাদ্দ করে । এই ব্লকে প্রায় 10 কোটি টাকা বরাদ্দ হয় । কিন্তু সেই ত্রাণ বণ্টনেই দুর্নীতির জোয়ার বয়ে যায় । এনিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা রুজু করেন এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক মোস্তাক আলম । সেই মামলার জেরে আদালত বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেয় ।
আদালতের নির্দেশে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর পঞ্চায়েত (Harishchandrapur Block 1 Panchayat) সমিতির সভানেত্রী কোয়েল দাস, বরুই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সোনামনি সাহা-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় এফআইআর দায়ের করে ব্লক প্রশসান । এর মধ্যে নাম ছিল সুজাতা সাহারও । তিনি কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেত্রী হয়েছিলেন । পরে তৃণমূলে যোগ দেন । কোয়েল দাস ও সোনামণি সাহা দীর্ঘদিন ধরে পলাতক । ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট সোনামণি সাহার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছে । তবে সুজাতাদেবী দু'দিন আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন ।
জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরেই তোপ দেগেছেন সুজাতাদেবী । তাঁর বক্তব্য, "2017 সালের বন্যায় এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য 2019 সালে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় 10 কোটি টাকা বরাদ্দ করেন । বিডিওর কাছে সেই টাকা আসে । আমরা জানতাম, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যেককে ৩ হাজার ৩০০ টাকা করে দেওয়া হবে । পরে জানতে পারি, বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের 70 হাজার টাকা করে দেওয়া হবে ।" তিনি জানান, সত্যিই 70 হাজার টাকা করে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের বরাদ্দ করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে বিডিওর কাছে জানতে চাওয়া হয় । কিন্তু বিডিও তাঁদের কিছু জানাতে অস্বীকার করেন । দু'দিন পর সুজাতাদেবী বিডিওর কাছে লিখিতভাবে মাস্টার রোল দাবি করেন । তিনি বলেন, "সেই মাস্টার রোল আমাকে দেওয়ার পরেই লক্ষ করি, সেখানে আমার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে । আমি সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানাই । আমার স্বাক্ষর কীভাবে জাল করা হল, তার তদন্তও দাবি করি । তিনি সেই তদন্ত না করে আমার বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেন ।"