মালদা, 27 জানুয়ারি : মালদার রতুয়া ব্লকে ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ৷ মৃতের পরিবারের দাবি, NRC আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন মধু সাহা নামে এই ব্যক্তি ৷ 46 বছর বয়সি মধু সাহা পেশায় ছিলেন রিকশাচালক ৷ মূলত শিলিগুড়ি শহরে রিকশা চালাতেন তিনি ৷ দিনকয়েক আগেই বাড়ি ফিরেছেন ৷ সারা দেশে NRC চালু করার কথা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ৷ কারণ রেশন কার্ড আর ভোটার কার্ড থাকলেও তাঁর কিংবা পরিবারের কারও আধার কার্ড নেই ৷ এদিকে আশেপাশের সবাই 24 ঘণ্টা তাঁকে বলে যাচ্ছে ,আধার কার্ড না থাকলে NRC র তালিকায় নাম ওঠার কোনো সম্ভাবনাও নেই তাই আধার কার্ড তৈরির জন্য মধুবাবু গত কয়েক মাসে বারবার ছুটে এসেছেন গ্রামে ৷ দৌড়ঝাঁপ করেছেন একাধিক ব্যাংক ও কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টগুলিতে ৷
কয়েকদিন আগে রতুয়া ব্লক মোড়ে থাকা এক CSP কেন্দ্রে স্ত্রী পঞ্চমী সাহার সঙ্গে তিনি আধার তৈরির আবেদন করেন ৷ তার জন্য ওই কেন্দ্রে 700 টাকা জমাও দেন ৷ কিন্তু কয়েকদিন পর তাঁকে জানানো হয় তাঁদের আধার কার্ড তৈরি হবে না ৷ তিনি চিন্তায় পড়ে যান ৷ তাঁদের আধার কার্ড না হলে দুই ছেলে ভরত আর কিশোরেরও আধার কার্ড হবে না ৷ এই কারণে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি ৷ পরিবারের অভিযোগ, গতকাল দুপুরে স্ত্রী ও শ্যালিকার সঙ্গে কথাবার্তা বলার পর তিনি নিজের ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন ৷ বেশ কিছুক্ষণ পর সেই দৃশ্য দেখতে পান তাঁর স্ত্রী ৷ এলাকার লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ মধুবাবুর পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয়দের দাবি , NRC আতঙ্কেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি ৷
মধুবাবুর ছেলে ভরত বলে , "আধার কার্ড না হওয়ায় NRC ভয় ঢুকে গিয়েছিল বাবার মনে ৷ সব সময় টেনশন করত ৷ আধার কার্ড না হলে NRC তালিকায় নাম উঠবে না ,এনিয়ে মানসিক অবসাদেও ভুগছিল বাবা ৷ দুপুরে মা আর মাসি বাড়ির বাইরে গল্প করছিল ৷ বাবাও সেখানে ছিল ৷ একসময় ভাত খাওয়ার কথা বলে বাবা বাড়ির ভিতরে চলে যায় ৷ এরপর ঘরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে ৷ আধার কার্ড না হওয়া এবং NRC আতঙ্কেই বাবা আত্মঘাতী হয়েছে ৷''