মালদা, 2 জানুয়ারি : মালদা জেলার অন্যতম প্রধান উৎসব গম্ভীরা ৷ মালদা ও দিনাজপুর সংলগ্ন এলাকা একসময় পৌন্ড্রবর্ধনভুক্ত ছিল ৷ এই জেলার পুরাতন মালদা, হবিবপুর, বামনগোলা ও গাজোল ব্লক বরিন্দ এলাকা নামে খ্যাত ৷ এই এলাকায় রাজবংশী, দেশি, পলি, বাবুপলি, সাধুপলি ইত্যাদি জনগোষ্ঠীর বসবাস ৷ এসব গোষ্ঠীর সম্মিলিত উৎসবই হচ্ছে গম্ভীরা উৎসব ৷ মূলত মহা বিষুব বা চৈত্র সংক্রান্তিতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয় ৷ এই উৎসব মূলত শিব বন্দনা ৷ কথিত আছে, এই উৎসবের প্রবক্তা ছিলেন দিনাজপুরের শিবভক্ত বানরাজারা ৷ দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর সংলগ্ন বানগড় এলাকায় সেই রাজাদের ভগ্নসৌধ এখনও দেখতে পাওয়া যায় ৷ একসময় সমাজ ও গ্রাম শাসনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিত গম্ভীরা গান ৷
গম্ভীরা গানকে জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে রাজ্য, দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক আঙিনায় পৌঁছে দিয়েছিলেন এই জেলার একাধিক লোকশিল্পী ৷ তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন যোগেন্দ্রনাথ চৌধুরি (মটরবাবু), নির্মলচন্দ্র দাস (নীরুবাবু), তপন হালদার, দোকড়ি চৌধুরি সহ আরও অনেকে ৷ মটরবাবু ও নীরুবাবু জেলার এই প্রাচীন লোকশিল্পকে অ্যামেরিকা, ইংল্যান্ড, রাশিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পৌঁছে দিয়েছিলেন ৷ প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধিও মটরবাবুর গম্ভীরার প্রশংসা করেছিলেন ৷ তবে গম্ভীরার সেই যুগ এখন আর নেই ৷ বর্তমানে কিছু দল জেলার প্রাচীন এই লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ট নয় ৷ সেকথা মানছেন একালের গম্ভীরা শিল্পীরাও ৷ তাই জেলার প্রাচীন এই লোক সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগী হয়েছেন ইংরেজবাজার পৌরসভার 12 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ দাস ৷ বছরের প্রথম দিনে তাঁর ওয়ার্ডে তিনি একটি গম্ভীরা মঞ্চের উদ্বোধন করেন ৷