মালদা , 25 জানুয়ারি : ভুয়ো নথি দাখিল করে সরকারি বিবেকানন্দ স্কলারশিপ পাওয়ার চেষ্টা করছে একটি চক্র ৷ তার প্রমাণ মিলেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ গোটা বিষয়টি দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ৷ গতকাল কলকাতায় আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের সভায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে ৷ এই চক্রের শিকড়ের খোঁজ পেতে আগামী সোমবার পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে অভিযোগ জানানো হবে ৷
স্নাতকোত্তর শ্রেণির মেধাবী পড়ুয়াদের জন্য রাজ্য সরকার বিবেকানন্দ স্কলারশিপ দিয়ে থাকে ৷ দু’বছর ধরে প্রতি মাসে পড়ুয়াদের দুই হাজার টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয় ৷ অর্থাৎ দুই বছরে একজন পড়ুয়া মোট ৪৮ হাজার টাকা স্কলারশিপ পান ৷ স্কলারশিপের জন্য অনলাইনে পড়ুয়াদের আবেদন জানাতে হয় ৷ সেই আবেদনপত্রের সঙ্গে আবেদনকারীকে মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশিট, স্নাতক স্তরের মার্কশিট, BDO-র দেওয়া রেসিডেনশিয়াল ও পরিবারের আয়ের সার্টিফিকেট, আধার কার্ড ও ব্যাঙ্কের পাস বইয়ের প্রতিলিপি অনলাইনে আপলোড করতে হয় ৷ 15 নভেম্বর পর্যন্ত সেই আবেদনপত্র জমা নিয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷ এই স্কলারশিপ পেতে প্রায় 400 টি আবেদনপত্র অনলাইনে জমা পড়ে ৷ এরপর সেই আবেদনপত্রগুলির ভেরিফিকেশন শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷ তখনই ধরা পড়ে, অনেক আবেদনকারী যে নথি জমা দিয়েছেন তাতে বিস্তর গরমিল রয়েছে ৷ প্রথম ধরা পড়ে স্নাতক শ্রেণির মার্কশিটে ৷ দেখা যায়, ২০১৯ সালের মার্কশিটে কন্ট্রোলার অফ এগজ়ামিনেশন হিসাবে সনাতন দাসের স্বাক্ষর রয়েছে ৷ অথচ সনাতনবাবু অনেকদিন আগেই সেই পদ থেকে চলে গেছেন ৷ যে সময় সেই মার্কশিট ইশু করা হয়েছিল, তখন সেই দায়িত্বে ছিলেন শ্যামাপদ মণ্ডল ৷ এতেই প্রথমে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের ৷ গোটা বিষয়টি তদন্তের জন্য চারজনের একটি কমিটি গঠন করা হয় ৷ ওই কমিটির নজরে আসে, অনেক আবেদনপত্রে থাকা আবেদনকারীর ছবির সঙ্গে তাঁর আধার কার্ড কিংবা ব্যাঙ্কের পাস বইয়ে থাকা ছবির কোনও মিল নেই ৷ সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে এমন ২৭টি গরমিল থাকা আবেদনপত্র কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে ৷ এখনও আবেদনপত্র খতিয়ে দেখার কাজ চলছে ৷ ধারণা করা হচ্ছে, এমন আবেদনপত্রের সংখ্যা আরও বাড়বে ৷