মালদা, 13 মে: 200 বছরের বেশি সময় ধরে একই রীতি মেনে জহুরা চণ্ডীপুজো হয়ে আসছে মালদা শহরের ঘোষবাড়িতে ৷ এই পুজোয় ব্রাহ্মণ্যবাদের কোনও বালাই নেই ৷ বংশপরম্পরায় পুজো করে আসেন বাড়ির বউয়েরা ৷ ঘোষবাড়ির এই পুজো ভক্তদের কাছে জাগ্রত পুজো হিসেবেই পরিচিত ৷ শুধু শহর কিংবা জেলার মানুষ নয়, পুরো বৈশাখ মাস জুড়ে ভিন জেলা, এমনকি ভিন রাজ্য থেকেও উপচে পড়ে ভক্তদের ভিড় ৷ বৈশাখের শেষ শনিবার এই পুজো হয় আরও ধুমধাম করে ৷ পাত পেড়ে খাওয়ানো হয় ভক্তদের ৷
বৈশাখ মাস পড়তেই জেলা জুড়ে চণ্ডীপুজো শুরু হয়ে যায় ৷ প্রতি মঙ্গল ও শনিবার করে চণ্ডীপুজো হয়ে থাকে ৷ জেলার উল্লেখযোগ্য জহুরাতলার পুজোর পাশাপাশি নাম রয়েছে ঘোষবাড়ির পুজোরও ৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় 200 বছর আগে প্রয়াত দীনবন্ধু ঘোষের স্ত্রী নীলো ঘোষের হাতে এই পুজোর পত্তন। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েই এই পুজো শুরু করেছিলেন তিনি ৷ পুরোনো বাঁশবাড়ির গোঁসাইটুলি এলাকায় 24 বছর বয়স থেকে পুজো শুরু করেছিলেন শতায়ু নীলোদেবী। পুজো করেছিলেন 119 বছর পর্যন্ত। প্রথমদিকে শুধুমাত্র তুলসিগাছে জল ঢেলে পুজো করা হত। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে জহুরা চণ্ডীর মুখাপুজো শুরু হয়।
নীলোদেবীর প্রয়াণের পর এই পুজোর দায়িত্ব বর্তায় তাঁর বউমা ঝাঁপানি ঘোষের উপর। তাঁর মৃত্যুর পর পুজো সামলাচ্ছেন প্রয়াত নগেন ঘোষের স্ত্রী রানিবালা ঘোষ। তাঁর বয়সও 90 ছুঁইছুঁই। বাড়িতেই এখন রয়েছে দেবীর মন্দির । মন্দিরে দেবীর 11টি মুখা থাকলেও একসঙ্গে দেবীর 52 বোনের পুজো হয় এই মন্দিরে। পুজো হয় মনসা প্রতিমারও ৷ বৈশাখের প্রতি মঙ্গল ও শনিবার পুজো দিতে ঘোষবাড়িতে মানুষের ভিড় উপচে পড়ে ৷ বৈশাখের শেষ পুজোর দিন খিচুড়ি, সবজি, বিভিন্ন ধরণের ভাজা, লুচি আর পায়েসের ভোগ দেওয়া হয়। সেদিন ভোগ খেতে ভিড় জমান কয়েক হাজার মানুষ। সবাইকেই পাত পেড়ে ভোগ খাওয়ানো হয়।