মালদা, 19 জুন : অবশেষে জিগ’শয়ের ঘটনাই যেন প্রমাণিত হল ৷ বাড়ি লাগোয়া সুউচ্চ গুদামঘরের মেঝে খুঁড়ে উদ্ধার হল চারটি দেহ ৷ অভিযুক্ত আসিফই পুলিশকে সেই জায়গা দেখিয়ে দেয় ৷ পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মৃতদেহ নয়, অর্ধচেতন অবস্থাতেই চারজনকে সুড়ঙ্গ দিয়ে গুদামঘরে নিয়ে গিয়েছিল আসিফ ৷ তবে তার দাদা আরিফও সন্দেহের বাইরে নয় ৷ উদ্ধার করা দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে ৷
আজ দুপুরে আসিফকে নিয়ে তার বাড়িতে হাজির হয় কালিয়াচক থানার পুলিশ ৷ কিছুক্ষণ পর সেখানে যান কালিয়াচক 3 নম্বর ব্লকের বিডিও, পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ৷ আসিফ পুলিশকে দেখিয়ে দেয় গুদামঘরের সেই জায়গা যেখানে সে বাবা-মা, ঠাকুমা ও ছোট বোনকে খুন করে পুঁতে রাখে ৷ সেখান থেকে চারটি দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷
কিন্তু কীভাবে খুন করা হয়েছে এই চারজনকে ? পুলিশ সুপার জানাচ্ছেন, ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে প্রথমে তাদের অবচেতন করে নেয় আসিফ ৷ তারপর তারা আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে সবাইকে গুদামঘরে নিয়ে যায় ৷ এই বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “গতকাল রাতে আরিফ মহম্মদ আমাদের জানায়, গত 28 ফেব্রুয়ারি তার ছোট ভাই বাবা-মা, ছোট বোন ও ঠাকুমাকে খুন করেছে ৷ সেই খবর পেয়েই পুলিশ রাতে ঘটনাস্থলে আসে ৷ কিন্তু বৃষ্টির জন্য রাতে তদন্ত চালানো যায়নি ৷ আজ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আসিফের দেখানো জায়গা থেকে আমরা চারটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছি ৷ দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে ৷ প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, 28 ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ আসিফ ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে চারজনকে খাইয়ে দেয় ৷ সেই বোতলটি উদ্ধার হয়েছে ৷ চারজন ওষুধের প্রভাবে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে সে সবাইকে দেওয়ালের সুড়ঙ্গ দিয়ে গুদামঘরে নিয়ে যায় ৷ সেখানে আগে থেকেই একটি চৌবাচ্চায় জল ভরে রেখেছিল সে ৷ চারজনের হাত-পা বেঁধে, মুখে টেপ লাগিয়ে চৌবাচ্চায় ফেলে দেয় ৷ তারপর জলের কল খুলে দেয় ৷ একটি মৃতদেহে এখনও টেপ লাগানো রয়েছে ৷ আরিফ সেই সময় ভাইকে বাধা দেয় ৷ কিন্তু ভাইয়ের রুদ্রমূর্তি দেখে সে পালিয়ে যায় ৷ আমরা আরিফের উদ্দেশ্যও খতিয়ে দেখছি ৷”