মালদা, 16 ডিসেম্বর: সরকারের ঘর থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল ৷ কথা ছিল, চাষিদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত দামে ধান কিনে তার চাল সরকারের ঘরে পৌঁছে দেবেন মিল মালিক (Malda rice mill)৷ কিন্তু সরকারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরেও সরকারকে চাল দিচ্ছেন না মিল মালিক ৷ এর জেরে হরিশ্চন্দ্রপুরের একটি রাইস মিলে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন জেলা খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা (Food department locks Malda rice mill)৷ এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে ৷ বিরোধীদের দাবি, এই ঘটনার পিছনে তৃণমূলের অনেক বড় মাথা রয়েছে (Govt Fund Fraud)৷ জড়িত রয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশও ৷
হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের কুস্তরিয়া গ্রামে বাঁকে বিহারি অ্যাগ্রোটেক প্রজেক্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি রাইস মিল রয়েছে ৷ এই মিল কর্তৃপক্ষ এ বার চাঁচল 1 নম্বর ব্লকের হজতপুরে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের কুশিদার চাষিদের কাছ থেকে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে ধান কেনার বরাত পায় ৷ সরকারের তরফে 13 হাজার কুইন্টাল ধান কেনার জন্য মিল কর্তৃপক্ষকে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা দেওয়া হয় ৷ পরিবর্তে সরকারের ঘরে চাল পৌঁছে দেওয়ার কথা মিল কর্তৃপক্ষের ৷ এই মিলের মালিকানা রয়েছে তিনজনের নামে ৷ সংগীতা আগরওয়াল, শীতল মোদি ও কিরণদেবী আগরওয়ালের নামেই মিলের যাবতীয় নথিপত্র ৷ জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি সংগীতা আগওয়াল আর কিরণদেবী আগরওয়াল এই মিল শীতল মোদির নামে হস্তান্তর করেছেন ৷ কিন্তু হস্তান্তরের নথিপত্রের কাজ এখনও শেষ হয়নি ৷ এই পরিস্থিতিতে শীতল মোদির কাছের আত্মীয় বিজয় মোদি ওরফে বাবলু জাল নথিপত্রের মাধ্যমে মিল চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ ৷
এ নিয়ে সিপিএমের স্থানীয় নেতা অনুপ আচার্য বলেন, “এই জালিয়াতির খবর আমাদের কাছেও আছে ৷ ওই মিল কর্তৃপক্ষ ধান কেনার জন্য সরকারের কাছ থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা নিলেও সরকারকে চাল দিচ্ছে না ৷ এই সাহস ওরা কোথায় থেকে পায় ? এই ঘটনা একদিনে হয়নি ৷ দীর্ঘদিন ধরে হয়েছে ৷ কার মদতে সাড়ে চার কোটি টাকা জালিয়াতি হল, তা নিয়ে আমরা তদন্ত দাবি করছি ৷ এর সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব ও প্রশাসনের একটা অংশ জড়িত ৷ নইলে এত বড় দুর্নীতি করা যায় না ৷ এখন ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই মিলে তালা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে ৷”