মালদা, 3 অক্টোবর: বিপজ্জনকভাবে বেড়েই চলেছে মহানন্দার জলস্তর । নদীর জলে বানভাসি হয়েছে জেলার দুই পৌর এলাকার হাজারও মানুষ । উঁচু জায়গা কিংবা কাছাকাছি কোনও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে তারা । তাদের জন্য আপাতত শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করছে দুই পৌর কর্তৃপক্ষ । জেলা সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপার ক্যাচমেন্টের জল প্রবল গতিতে নিচে নেমে আসার জন্যই দুই শহরে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে । আরও কয়েকদিন ধরে জল নেমে আসার সম্ভাবনা । তবে এর মধ্যে উত্তরবঙ্গে যদি প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়, তবে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে ।
মহানন্দার জলস্তর বাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি মালদার দুই পৌর এলাকায় - Flood
মহানন্দার জলস্তর বেড়েই চলেছে । বানভাসি হয়েছে মালদা জেলার দুই পৌর এলাকার হাজারও মানুষ । তাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।

এই মুহূর্তে জেলার প্রধান দুই নদী গঙ্গা ও ফুলহরের জলস্তর কমছে । আজ দুপুর 12টায় গঙ্গার জলস্তর ছিল 24.44 মিটার । বিপদসীমা 24.69 মিটার থেকে 25 সেন্টিমিটার উঁচু হলেও তা চরম বিপদসীমা 25.30 মিটার থেকে অনেকটাই নিচে রয়েছে । একই সময়ে ফুলহর তার বিপদসীমার 27.43 মিটার উচ্চতায় বয়েছে । এই নদীর চরম বিপদসীমা 28.35 মিটার । তবে মহানন্দা চরম বিপদসীমার 21.75 মিটার থেকে 22 সেন্টিমিটার উঁচু দিয়ে বইছে । দুপুর 12টায় নদীর জলস্তর ছিল 21.97 মিটার । মহানন্দা জেলার দুই পৌর শহর মালদা ও পুরাতন মালদার মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত । তাই নদীর দুই তীরে থাকা দুই পৌরসভার একাধিক ওয়ার্ডকে ডুবিয়ে দিয়েছে নদী । পুরাতন মালদা পৌরসভার আট, নয় ও 20 নম্বর ওয়ার্ডের বেশিরভাগ অংশ এখন জলের তলায় । ইংরেজবাজার পৌরসভারও আট, নয়, দশ,12, 21, 23সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের নিচু অংশে ঢুকেছে নদীর জল । এই এলাকাগুলি থেকে সরে যাচ্ছে বাসিন্দারা । অনেকে উঁচু জায়গা বা আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে । আবার অনেকে কাছাকাছি স্কুল কিংবা পৌরসভার ত্রাণ শিবিরে চলে গিয়েছে ।
ইংরেজবাজার পৌরসভার প্রশাসক নীহাররঞ্জন ঘোষ জানিয়েছেন, "আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি । মহানন্দার অবস্থা বিপজ্জনক । নদী পাড়ের বাসিন্দাদের ঘর ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে । যারা বিভিন্ন স্কুল ও ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের জন্য খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।" একই কথা জানিয়েছেন পুরাতন মালদা পৌরসভার প্রশাসক কার্তিক ঘোষও । তিনি বলেন, "সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহানন্দার জলস্তর আরও কয়েকদিন বাড়ার সম্ভাবনা । তার মধ্যে উত্তরবঙ্গে ফের ভারী বৃষ্টি শুরু হলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে । চলতি বর্ষায় নিচু ওয়ার্ডগুলিতে দু'বার নদীর জল ঢুকল । মানুষ বিপন্ন। আমরা তাদের পাশে রয়েছি ।"