মালদা, ২ জুন : শেষ পর্যন্ত টনক নড়ল পুরাতন মালদা পৌর কর্তৃপক্ষের৷ পৌরসভার উদ্যোগে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য খোলা হল কোয়ারানটিন সেন্টার৷ গতকাল থেকে সেই সেন্টার চালু করা হয়েছে৷ প্রথম দিনে সেখানে ১৪ দিনের জন্য আশ্রয় নিয়েছেন ভিনরাজ্য ফেরত ১২ জন শ্রমিক৷ তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি করেন পুরাতন মালদা পৌরসভার চেয়ারম্যান৷ তাঁর বার্তা, শহরের কোথাও কোনও পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এলে এলাকার বাসিন্দারা যেন তাঁকে এই সেন্টারে পাঠায়৷ কোথাও কোনও সমস্যা হলে যেন তাঁদের খবর দেওয়া হয়৷ তাঁরাই ভিনরাজ্য থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের কোয়ারানটিন সেন্টারে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবেন৷
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, মালদা জেলার প্রায় দুই লাখ শ্রমিক ভিনরাজ্যে কাজে যায়৷ কোরোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয় ৷ কাজ হারায় শ্রমিকরা৷ ঘরে ফেরার জন্য তাদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়৷ অনেকে নিজেদের উদ্যোগে গাড়ি ভাড়া করে, কেউ সাইকেল চালিয়ে, কেউবা হেঁটেই ঘরে ফেরা শুরু করে৷ অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে উদ্যোগী হয়৷ দেশজুড়ে চলতে শুরু করে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন৷ তার ফলও মিলতে শুরু করে৷ গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন এই জেলায় ফিরে আসছে হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক৷ জেলা প্রশাসনের সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ৭০ হাজারের বেশি শ্রমিক জেলায় ফিরে এসেছে৷ তাদের অনেককে হোম কোয়ারানটিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ অনেককে পাঠানো হয়েছে ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টারে৷ কিন্তু ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টারের ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শ্রমিকরা৷ সেখানে তাদের খাবার কিংবা পানীয় জল দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে৷ এনিয়ে তারা বিক্ষোভও দেখিয়েছে৷ যদিও জেলা প্রশাসন শ্রমিকদের ক্ষোভে কান দিতে নারাজ৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোয়ারানটিন সেন্টারে থাকা শ্রমিকদের খাবারের দায়িত্ব দেওয়া হয় গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে৷ কিন্তু নিজেদের সীমিত অর্থে তাদের পক্ষে সেন্টারে থাকা শ্রমিকদের ১৪ দিন ধরে খাওয়ানো সম্ভব নয় বলে প্রশাসনকে জানিয়ে দেয় অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত৷ এই অবস্থায় সেন্টারে বাড়ি থেকেই শ্রমিকদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে৷