পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে সবুজ সাথীর সাইকেল মালদা, 3 সেপ্টেম্বর: স্কুল পড়ুয়াদের সুবিধের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছিলেন 'সবুজ সাথী' প্রকল্প ৷ এই প্রকল্পে স্কুল যাতায়েতের জন্য কয়েক বছর ধরেই পড়ুয়াদের সাইকেল দেওয়া হচ্ছে ৷ কিন্তু সেই সাইকেলই এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির ৷ বিলি না হওয়া সাইকেল স্কুলে জমছে বছরের পর বছর ৷ দীর্ঘদিন পড়ে থাকতে থাকতে সাইকেলগুলি হয়ে যাচ্ছে নষ্টও ৷ শুধু তাই নয়, সাইকেলগুলি স্কুলের একটা বড় জায়গা দখল করে রেখেছে ৷ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইছে, সাইকেলগুলি স্কুল চত্বর থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক ৷ কিন্তু এ নিয়ে প্রশাসন এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি ৷ অবশেষে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন ৷
এ নিয়ে বেজায় সমস্যায় পড়েছে পুরাতন মালদার বাচামারি জিকে হাইস্কুল কর্তৃপক্ষও ৷ স্কুলের জায়গা এমনিতেই কম ৷ তার উপরে তিন হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী ৷ বহুতল বানিয়ে ক্লাসরুমের চাহিদা মেটানো হয়েছে ৷ মূল গেট দিয়ে স্কুলের ভিতরে ঢুকলেই দেখা যাবে, একদিকে ডাঁই করে রাখা সবুজ সাথীর সাইকেল ৷ সেই জায়গায় পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাহন থাকার কথা ৷ কিন্তু গোটা গ্যারেজটাই দখল করে নিয়েছে উদ্বৃত্ত 'সবুজ সাথী' ৷ এর জেরে সবাই বাধ্য হয়েছে নিজেদের সাইকেল কিংবা স্কুটার-বাইক অন্য জায়গায় রাখতে ৷
আরও পড়ুন:সবুজ সাথীর সাইকেল বিক্রির অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে, বিক্ষোভ স্থানীয়দের
স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক অমৃতকুমার ঘোষ জানান, সবুজ সাথী প্রকল্পে প্রতি বছরই তাঁদের স্কুলে সাইকেল পাঠানো হয় ৷ সেসব ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিলিও করে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু প্রতি বছরই কিছু ছেলেমেয়ে পড়াশোনা ছেড়ে কাজে চলে যায় ৷ তারা আর স্কুলে আসে না ৷ এর জন্যই প্রতি বছর উদ্বৃত্ত সাইকেল জমা হতে থাকে ৷ এভাবে এখনও পর্যন্ত 70-80টি সবুজ সাথীর সাইকেল স্কুলে জমে রয়েছে ৷
তিনি বলেন, "এই সাইকেলগুলি নিয়ে কিছু করতে পারছি না ৷ আমরা বিষয়টি ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি ৷ আমাদের যেন কম সাইকেল পাঠানো হয় তারও আর্জি জানানো হয়েছে ৷ কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলছে, কম সাইকেল পাঠানো যাবে না ৷ কারণ, এখন পোর্টাল থেকেই কোনও স্কুলে যাবতীয় তথ্য রাজ্য শিক্ষা দফতর নিয়ে নেয় ৷ তবে সাইকেলগুলি পড়ে থেকে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ৷ কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই ৷ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাইকেলগুলি ফেরত নিলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফেরত দিয়ে দেব ৷"
আরও পড়ুন:সবুজ সাথীর সাইকেল পিছু টাকা নেওয়ার অভিযোগ, স্কুলের সামনে বিক্ষোভ ছাত্রদের
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পুরাতন মালদার বিডিও সেঁজুতি পাল মাইতি বলেন, "আমি এই ব্লকে কিছুদিন আগে যোগদান করেছি ৷ এই সমস্যা নিয়ে এখনও কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার কাছে অভিযোগ জানায়নি ৷ তাছাড়া সরকারি প্রকল্পের সাইকেল যে পড়ে নষ্ট হচ্ছে, তাও আমার জানা ছিল না ৷ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি ৷"