মালদা, 26 অক্টোবর : কথা রেখেছে পুলিশ। জেলা থেকে পালানোর আগে গ্রেফতার করা হয়েছে আদিবাসী শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পরিতোষ চৌধুরীকে । সোমবার মালদা টাউন স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ । জেলা আদালতের অনুমতিতে তাঁকে 3 দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে । পুলিশের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন আদিবাসী সংগঠনের নেতা মোহন হাঁসদা । তিনি অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন । তবে এপ্রসঙ্গে পুলিশের কোনও আধিকারিক সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলতে চাননি । মুখ খোলেননি পরিতোষবাবুও ।
উল্লেখ্য, গত 17 অক্টোবর ইংরেজবাজার পৌরসভার 3 নম্বর ওয়ার্ডের মালঞ্চপল্লি এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন হবিবপুর ব্লকের মানিকোড়া হাইস্কুলের শিক্ষক সুদীপ টুডু (31) । তাঁর বাড়ি গাজোলের মালডাঙা গ্রামের বিবেকানন্দপল্লিতে । নিজের গাড়িতে সেদিন আত্মীয়ের বাড়ি এসেছিলেন ওই শিক্ষক । গাড়ি রাখা ছিল 12 নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে । অভিযোগ, বিকেলে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফেরার সময় মালঞ্চপল্লি সাবওয়ে গেটের কাছে সুদীপবাবুকে আটকান ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর, বর্তমান ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর পরিতোষ চৌধুরী ।
কী হয়েছিল 17 অক্টোবর ?
ওই দিন কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে একটি সাইকেল চুরি যায় । অভিযোগ, শিক্ষক সুদীপ টুডুকে দেখে তৃণমূল নেতা পরিতোষ 'চোর চোর' বলে চিৎকার শুরু করেন । শিক্ষক তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তিনি চোর নন, একজন শিক্ষক । কিন্তু সেসব কথা কানে তোলেননি তৃণমূল নেতা । তিনি সুদীপবাবুকে মারতে মারতে নিজের বাড়িতে টেনে নিয়ে যান । সেখানে তাঁর সঙ্গে তাঁর পরিচিত লোকজনও শিক্ষককে রাস্তায় ফেলে মারধর করতে থাকে । এমনকি পরিতোষবাবু তাঁর বাড়ির পোষা কুকুরটিকেও লেলিয়ে দেন বলে অভিযোগ সুদীপবাবুর । কুকুরের কামড়ে, আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত শিক্ষকের উপর দীর্ঘক্ষণ নির্যাতন চালানোর পর তাঁকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । এই ঘটনায় ইংরেজবাজার থানায় পরিতোষবাবু-সহ 10 জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সুদীপ টুডুর বাবা লক্ষ্মণ টুডু । এর আগে পুলিশ বিশ্বজিৎ হালদার ও জীতেন মণ্ডল নামে দু'জনকে গ্রেফতার করে ।