মালদা, 20 ডিসেম্বর : করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন আতঙ্কের আবহেই সামনে বড়দিন ৷ জনসমাগম এড়াতে মালদার ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট, দুই গির্জা কর্তৃপক্ষই 25 ডিসেম্বর যিশু খ্রীষ্টের জন্মদিনে সমবেত প্রার্থনা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক মহলে ধরা পড়ছে এর উল্টো চিত্র ৷ করোনার কারণে আয় তলানিতে ঠেকলেও বড়দিন ও নববর্ষ উপলক্ষে আটদিন ধরে মালদা শহরে ক্রিসমাস কার্নিভালের (Christmas Carnival in Malda) আয়োজন করছে ইংরেজবাজার পৌরসভা। একে তো করোনা আবহ, তার উপর যখন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় মালদায় এসে সরকারি কোষাগারের ভাঁড়ে মা ভবানী দশার কথা উল্লেখ করছেন,তখন এই কার্নিভাল আয়োজনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
2017 সালে প্রথম ইংরেজবাজার পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ এই শহরে বড়দিন ও বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে কার্নিভালের আয়োজন করেন। কিন্তু করোনার জেরে গত বছর কার্নিভাল বন্ধ ছিল । এবার ফের জাঁকজমক করে সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে শহরের মূল কেন্দ্র, ফোয়ারা মোড়ে তার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে । তৈরি হচ্ছে মঞ্চ, লাগানো হচ্ছে আলো। তবে শুধু ফোয়ারা মোড়ই নয়, এই কার্নিভালের আয়োজন হবে ফোয়ারা মোড় থেকে এক কিলোমিটারেরও বেশি পথ জুড়ে । তার জন্য 25 ডিসেম্বর ও 31 জানুয়ারি শহরের রাস্তায় যান চলাচলে কিছু বিধিনিষেধও আরোপ করা হচ্ছে । এবার এই অনুষ্ঠানের দায়িত্বে রয়েছেন পৌরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য আশিস কুণ্ডু ।
ওমিক্রন আতঙ্ক, পৌরসভার আর্থিক সঙ্কট সত্ত্বেও মালদায় শীতের কার্নিভাল আরও পড়ুন : সেবকে নির্মীয়মাণ রেল প্রকল্পে দুর্ঘটনা, মৃত দুই শ্রমিক
ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন,“করোনার দাপটে দু’বছর ধরে মানুষ গৃহবন্দি । সেই কারণে আমাদের শীতকালীন কার্নিভালও বন্ধ ছিল । এবছর করোনা পরিস্থিতি আপাতদৃষ্টিতে অনেকটা স্বাভাবিক । তাই ইংরেজবাজার পৌরসভার উদ্যোগে বড়দিনের কার্নিভাল এবং বর্ষবরণ উৎসব পালিত হচ্ছে । এর জন্য ফোয়ারা মোড় থেকে রথবাড়ি মোড় হয়ে বিদ্যাসাগর স্ট্যাচু পর্যন্ত এলাকাকে আলো ঝলমলে করে তোলা হবে । ফোয়ারা মোড়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে । জেলা ও বাইরের শিল্পীরা সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবেন । সান্টা ক্লজ রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বাচ্চাদের মনোরঞ্জন করবেন । থাকবে জিঙ্গল বেল, ঘোড়াগাড়িও । রাস্তার দু’ধারে বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা পিঠে-পুলি থেকে শুরু করে কেক-পেস্ট্রির কাউন্টার করবেন । মানুষ নিজের পছন্দমতো খাবার সেখান থেকে কিনে খেতে পারবেন। ওই সময়ে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে । স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও পৌরসভার স্টলগুলি থেকে মানুষকে মাস্ক ও স্যানিটাইজার দেওয়া হবে ।”
আশিসবাবু জানিয়েছেন, এই কার্নিভালের জন্য আপাতত 10 থেকে 11 লাখ টাকার বাজেট তৈরি হয়েছে। অনুষ্ঠানের পর পূর্ণাঙ্গ হিসাব পাওয়া যাবে । পৌরসভার আয় নিয়ে তাঁর বক্তব্য, "পৌরসভার আয় আগের থেকে অনেকটা বেড়েছে । আয় বাড়ানোর জন্য আমরা প্রত্যেক নাগরিকের কাছে বকেয়া কর প্রদানের আবেদন জানাচ্ছি । এই আবেদনে প্রচুর মানুষ সাড়া দিয়েছেন। তাঁরা কর জমা দিতে আসছেন। গত মাসে অভূতপূর্ব কর আদায় হয়েছে । কার্নিভালের জন্য আমরা জেলার বণিকসভার কাছেও সাহায্যের আবেদন জানিয়েছি ৷”