পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

নদী ভাঙনে বিধ্বস্ত রতুয়ার দু'টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দুর্গত মানুষের পাশে DYFI - রতুয়া

গঙ্গা-ফুলহরের বন্যা ও ভাঙনে বেশ কয়েক বছর ধরেই ত্রস্ত রতুয়া 1 ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামের লোকজন ৷ ঘরছাড়া হয়েছে অন্তত দু’হাজার মানুষ ৷ এদের অনেকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে, অনেকে আবার এলাকারই কোনও উঁচু জায়গায় ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করছে ৷ এই পরিস্থিতিতে সরকারি ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে দুর্গতদের ৷ সেই কারণে গতকাল বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করলেন CPI(M)-এর রতুয়া 1 নং লোকাল কমিটির সম্পাদক জুহুর আলম সহ অন্যান্যরা ৷ পরিদর্শনের পর DYFI-এর মালদা জেলার সহ সম্পাদক মওদুদ আলম মধু বলেন , “আমরা সরকারে নেই, কিন্তু মানুষের দরকারে আছি ৷”

ছবি
ছবি

By

Published : Sep 5, 2020, 11:10 AM IST

মালদা, 5 সেপ্টেম্বর : বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করলেন CPI(M)-এর রতুয়া 1 নং লোকাল কমিটির সম্পাদক জুহুর আলম সহ অন্যান্যরা ৷ এলাকা পরিদর্শনের পর CPI(M)-র যুব সংগঠন, DYFI-এর মালদা জেলার সহ সম্পাদক মওদুদ আলম মধু বলেন , “আমরা সরকারে নেই, কিন্তু মানুষের দরকারে আছি৷”

গঙ্গা-ফুলহরের বন্যা ও ভাঙনে বেশ কয়েক বছর ধরেই ত্রস্ত রতুয়া 1 ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামের লোকজন ৷ প্রতি বছরই একটু একটু করে নিজেদের দিকে এগিয়ে আসছে দুই নদী ৷ স্থানীয়দের বক্তব্য, গঙ্গা ও ফুলহর এবার মিলিত হতে চাইছে ৷ তার জেরে প্রতিবছর দুই নদীর ভাঙনের কবলে পড়ছে এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ৷ একসময় দুই নদীর দূরত্ব ছিল ২৫ কিলোমিটারেরও বেশি ৷ বর্তমানে সেই দূরত্ব কমে দাঁড়িয়ে এক থেকে দেড় কিলোমিটারে ৷ গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার ভাঙনে মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গা তীরবর্তী জঞ্জালিটোলা ও জাফর হাজিটোলা গ্রাম দু'টির অস্তিত্ব এখন আর নেই বললেই চলে ৷ এই দুই গ্রাম থেকে একসময় গঙ্গা ছিল দুই কিলোমিটার দূরে ৷ বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতটি মূলত ফুলহরের তীরে ৷ এই গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গারামটোলা ও দ্বারকটোলা গ্রামের প্রচুর ফসলি জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে ৷ এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত মণিরামটোলা, আমিরচাঁদটোলা, রামায়ণপুর, জিতুটোলা, শ্রীকান্তটোলা, সরকারটোলা সহ একাধিক গ্রাম এখন অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে ৷ এবছর গঙ্গা ভাঙনের প্রকৃতি খুব খারাপ ৷ যেদিন ভাঙন শুরু হচ্ছে, সেদিন একেকবারে এক থেকে তিন রশি পরিমাণ জমি নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে (এক রশি অর্থাৎ ৮০ ফুট)৷ গঙ্গার ভাঙন এভাবেই চলতে থাকলে আর এক বছরের মধ্যে এসব গ্রাম মানচিত্রে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেই মনে করছে এলাকার মানুষ৷

মওদুদ আলম মধুর বক্তব্য

চলতি বর্ষা মরশুমে জেলার প্রথম নদী ভাঙন শুরু হয়েছিল রতুয়াতেই ৷ গঙ্গা ও ফুলহরের ভাঙনে নদীতে এখনও পর্যন্ত তলিয়ে গিয়েছে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা ৷ মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের দু'টি সংসদের বেশিরভাগ অংশ নদীগর্ভে চলে গিয়েছে৷ সময় থাকতে প্রায় ৪৫০টি বাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিয়েছে গ্রামবাসীরা ৷ অবশ্য এর মধ্যে বেশিরভাগই কাঁচা বাড়ি ৷ ঘরছাড়া হয়েছে অন্তত দু’হাজার মানুষ৷ এদের অনেকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে, অনেকে আবার এলাকারই কোনও উঁচু জায়গায় ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করছে৷ এই পরিস্থিতিতে সরকারি ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে দুর্গতদের৷ যদিও ব্লক প্রশাসন থেকে দাবি করা হয়েছে, দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠানো হয়েছে৷ এক্ষেত্রে কোনও প্রশ্ন ওঠার কথা নয়৷

এই আবহে গতকাল ওই দুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা পরিদর্শনে যায় DYFI-এর একটি প্রতিনিধি দল৷ এলাকা পরিদর্শনের পর সংগঠনের জেলা সহ সম্পাদক মওদুদ আলম মধু বলেন, “ আজ আমরা মহানন্দটোলা ও বিলাইমারির ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করলাম৷ দেখলাম, গঙ্গা ও ফুলহরের দাপটে মানুষ কতটা অসহায়৷ দুই নদীর ভাঙনে অসংখ্য মানুষের বাড়ি, পৈতৃক সম্পত্তি তলিয়ে গিয়েছে৷ দুর্গতরা কোথায় থাকবে বুঝতে পারছে না৷ তারা কোথাও জায়গা পাচ্ছে না৷ সরকারও এদের পুনর্বাসনের জন্য কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না৷ অথচ এলাকার সাংসদ BJP-র প্রতিনিধি৷ এই এলাকার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ও বিধায়ক রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি৷ তবু দুর্গতরা কোনও সাহায্য পাচ্ছে না৷ কোনও ত্রাণ আসেনি ৷ এক কিলো চিঁড়েও কেউ পায়নি ৷ গৃহহীনরা ত্রিপল পর্যন্ত পায়নি ৷ আমরা আরও জানলাম, ২০১৯ সালের বন্যায় যাঁরা বিপর্যস্ত হয়েছিলেন, তাঁরা কেউ সরকারি আর্থিক সাহায্য পায়নি৷ অনেকের নামে সরকারি সাহায্য এসেছে, কিন্তু তাঁদের হাতে আসেনি৷ কারণ, মাঝরাস্তাতেই সেসব গায়েব হয়ে গিয়েছে৷ আমরা আজ দুর্গতদের বলে গেলাম, এনিয়ে সরকার যদি কোনও ব্যবস্থা না নেয়, তবে আমরা আন্দোলনে নামব৷ মানুষের অধিকার মানুষকে বুঝিয়ে দেব৷ আমরা সরকারে নেই, কিন্তু মানুষের দরকারে আছি৷”

ABOUT THE AUTHOR

...view details