মালদা, 9 জুন:ঘোষণা হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের তারিখ ৷ আগামী 8 জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট ৷ নবজোয়ার কর্মসূচির মাধ্যমে দলের সমস্ত স্তরের কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করছে তৃণমূল ৷ এই কর্মসূচির মাধ্যমে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, দলের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব রাখা যাবে না ৷ কিন্তু পুরাতন মালদার মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের দেখা গেল উলটো ছবি ৷
2018 সালের ভোটের পর থেকে কলহ শুরু হয়েছে তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডে ৷ দলীয় প্রধানকে সরতে হয়েছে ৷ বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাজেট ৷ প্রধানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলাও হয়েছে ৷ হয়েছে সবই। শুধু হয়নি উন্নয়ন। এরইমধ্যে আরও একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা হল। এবার আবারও প্রচারে ঝড় তুলবে রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু এলাকার মানুষের প্রশ্ন, উন্নয়ন কবে হবে?
আরও পড়ুন:পঞ্চায়েতে কেন্দ্র না রাজ্য পুলিশ, ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখলেন নির্বাচন কমিশনার
2018 সালের নির্বাচনে মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের 18টি আসনের মধ্যে তৃণমূল 14টি আসন দখল করেছিল ৷ বাকি চারটি আসনের মধ্যে বিজেপি দু’টি, সিপিএম ও কংগ্রেস একটি করে আসন পায় ৷ বোর্ড গড়ার কিছুদিনের মধ্যে থেকেই কোন্দল শুরু হয়ে যায় শাসকদলের মধ্যে ৷ প্রধান রেজিনা খাতুনের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় ৷ দায়িত্ব পান রুকসানা খাতুন ৷ পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যায়নি ৷ কিন্তু বন্ধ করে দেওয়া হয় বাজেট প্রক্রিয়া ৷ এর জন্য উপ-প্রধান সারাফত আলির নেতৃত্বে একজোট হন দলের সঙ্গে বিরোধী সদস্যদের একাংশও ৷
উপপ্রধান সারাফত আলি বলছেন, "মহিষবাথানির বিভিন্ন এলাকায় এখনও যে উন্নয়ন হয়নি, তা ঠিক ৷ আগে এই পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন রেজিনা খাতুন ৷ দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় তাঁকে সরিয়ে আমরা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির এক সদস্যকে প্রধান করি ৷ কিন্তু পরবর্তী কালে তিনি প্রাক্তন প্রধানের সঙ্গে জড়িত হয়ে অস্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছেন ৷ স্বেচ্ছাচারিতা করছেন ৷ এতেই পঞ্চায়েতে উন্নয়নের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ ৷ এর জন্য আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে বলে শুনেছি ৷ কিন্তু পঞ্চায়েতি রাজে উপ-প্রধানের কোনও ভূমিকা নেই ৷ সবই প্রধানের দায়িত্ব ৷ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করলে আমি কেন, কোনও সদস্য কিছু করতে পারবেন না ৷ কিন্তু প্রধান সেভাবে কাজ করছেন না বলেই এই সমস্যা হয়েছে ৷ আমরা ব্লক, জেলা, এমনকি রাজ্য নেতৃত্বকেও জানিয়েছি ৷ কাজ না হওয়ার জন্য প্রধানই পুরোপুরি দায়ি ৷"
আরও পড়ুন :নওদায় গোষ্ঠীকোন্দলে তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার এক
উপ-প্রধানের বক্তব্যকে অস্বীকার করেই প্রধান রুকসানা খাতুন বলেন, "আমি চাই এলাকার উন্নয়ন হোক ৷ মানুষের সমস্যা দূর হোক ৷ কিন্তু আমাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ বিরোধীদের হাত করে দলের লোকজনই আমাকে কাজ করতে দিচ্ছে না ৷ এদের নেতৃত্বে রয়েছেন উপপ্রধান ৷ আমি গোটা বিষয়টি বিডিও থেকে জেলাশাসককে জানিয়েছি ৷ ব্লক থেকে জেলা নেতৃত্বকেও জানিয়েছি ৷ ওরা আমার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করছে ৷ হাইকোর্ট থেকে শুরু করে আমার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছে ৷" পুরাতন মালদা ব্লক (গ্রামীণ) তৃণমূলের সভাপতি নবেন্দু সেন শসাকদলের এই কলহের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন ৷ এই প্রসঙ্গেই তিনি জানান, কিছু সমস্যা সমাধান করতে পঞ্চায়েত উন্নয়নের জন্য উদ্য়োগ নিয়েছে ৷ মানুষের সমস্যা দূর করতে চেষ্টা করা হচ্ছে ৷