মালদা, 20 এপ্রিল: সকাল 11টা'তেই চড়া রোদে চোখ ঝলসে যাওয়ার উপক্রম ৷ বইতে শুরু করছে লু ৷ গরম হাওয়া নাক দিয়ে ঢুকে রক্ত পর্যন্ত শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম ৷ তখনই তাপমাত্রা দেখাচ্ছে 39 ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷ কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জেলাজুড়ে চলছে ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহ ৷ আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, এমন পরিস্থিতি চলবে আরও কিছুদিন ৷ সেই তাপ মাথায় নিয়েই দূরের গ্রাম থেকে পানীয় জল নিয়ে ঘরে ফিরছেন আদিবাসী রমণীরা ৷ মাসদু'য়েক ধরে তাঁদের এভাবেই জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে ৷
পুরাতন মালদার ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিষবাথান গ্রামে শ'খানেক পরিবারের বসবাস ৷ গ্রামবাসীদের সবাই আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত গরিব মানুষ ৷ অন্যের জমিতে কাজ করেই মূলত পেট চলে ৷ যেখানে পরদিন পেটে কী পড়বে, তাই নিয়েই দিনভর চিন্তা চলে, সেখানে নিজের গাঁটের খরচে বাড়িতে জলের ব্যবস্থা করার কথা কারও ভাবনাতেও আসে না ৷ একসময় মালদা শহরের কোনও সহৃদয় ব্যক্তি এই আদিবাসী মানুষগুলোর সুবিধের কথা ভেবে গ্রামে একটি সাব মার্সিবল পাম্প বসিয়ে দিয়েছিলেন ৷ বেশ উপকার হয়েছিল গরিব মানুষগুলোর ৷ কিন্তু মাস দুয়েক আগে সেই পাম্প খারাপ হয়ে গিয়েছে ৷ খরা শুরুর আগেই গ্রামবাসীরা পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে পাম্পটি ঠিক করে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন ৷ কিন্তু প্রধানের সাফ কথা, আগে দেখা হবে, তারপর ব্যবস্থা ৷
গ্রামের বাসিন্দা রানি মুর্মু বলছেন, "গ্রামে জল নেই ৷ দূরের পাড়া থেকে জল নিয়ে আসতে হচ্ছে ৷ গ্রামে যেক'টা পুকুর রয়েছে, প্রায় প্রতিটাই শুকিয়ে গিয়েছে ৷ তাই বাইরে থেকে জল এনেই জল খেতে হচ্ছে ৷ ওই জলে ঘরের যাবতীয় কাজকর্মও চলছে ৷ গ্রামে একটা সাবমার্সিবল পাম্প আছে, কিন্তু সেটা খারাপ হয়ে গিয়েছে ৷ মঙ্গলবার প্রধানকে আবারও জানানো হয়েছে ৷ কিন্তু কবে ঠিক হবে জানি না ৷ প্রধান শুধু বলছে, ব্যবস্থা করবে ৷ কবে করবে কে জানে! আর নেতারা অনেক আশ্বাস দেয় ৷ ভোট মিটলে তাদের দেখা যায় না ৷"