মালদা, 17 ডিসেম্বর: রেললাইন থেকে যুবকের দ্বিখণ্ডিত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য হরিশ্চন্দ্রপুরে। গ্রামের জলসার আসর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে যুবককে খুনের অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠিয়েছে রেল পুলিশ। মৃত যুবকের নাম কাজিরুল ইসলাম (25) ৷
হরিশ্চন্দ্রপুরের কাতলামারী গ্রামের বাসিন্দা মৃত কাজিরুলের মা সাহানারা বিবি অভিযোগ করে বলেন, "ছেলে গতকাল জলসা দেখতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে। আমার বউমার অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, তা নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল। এই নিয়ে থানা-পুলিশও হয় ৷ সেই সময় পুলিশ ছেলেকে গ্রেফতার করেছিল। ছেলেকে একমাস জেল খাটতে হয়েছিল। আমার ছেলে এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছিল ৷ তারপর আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে মেয়ের বাড়ির লোকজন ৷ আমি দোষীদের শাস্তি চাই।"
মৃত কাজিরুলের দিদি নাসিনা বানু অভিযোগ করে বলেন, "শনিবার রাতে আমার ভাই জলসা দেখতে গিয়েছিল। সেই সময় ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ওকে ঘরে ঢুকিয়ে মারধর করা হয়। রবিবার সকালে রেল লাইন থেকে ভাইয়ের দেহ উদ্ধার হয়। ভাইয়ের স্ত্রী বাবার বাড়িতে থেকেই সংসার করতে চাইত। কিন্তু ভাই নিজের বাড়িতেই থাকতে চাইত। এর আগেও গণ্ডগোলের জেরে ভাইকে জেলে পাঠানো হয়েছিল।" পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় এখনও পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর কুমেদপুর এলাকার বাসিন্দা জাসমিনারা খাতুনের সঙ্গে বছরদু'য়েক আগে বিয়ে হয় কাজিরুলের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকত। এমনকী, স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কাজিরুলের বিরুদ্ধে ৷ সেই সময় স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে এক মাস জেল খেটেছিলেন কাজিরুল। শনিবার রাতে টেটিয়া গ্রামে স্ত্রীর বাড়ি থেকে খানিক দূরে জলসা দেখতে এসেছিলেন কাজিরুল। অভিযোগ, সেই সময় কাজিরুলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে ডেকে নিয়ে যায়। রবিবার সকালে রেললাইন থেকে কাজিরুলের দ্বিখণ্ডিত দেহ উদ্ধার হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে রেল পুলিশ ও হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।