পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

হোম কোয়ারানটিনে থাকাকালীন মালদায় উদ্ধার ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ - মালদায় উদ্ধার ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ

ভিন রাজ্য থেকে ফিরে দু'দিন আগেই হোম কোয়ারানটিনে যান । আর আজই ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় । স্থানীয় ও পুলিশের ধারণা, ব্যবসায় অনের ঋণ হয়ে যাওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন তিনি ।

Suicide
ছবিটি প্রতীকী

By

Published : Jun 6, 2020, 10:39 PM IST

মালদা, 6 জুন : দু'দিন আগেই ভিন রাজ্য থেকে ফেরেন । তারপর নির্দেশমতো হোম কোয়ারানটিনে ছিলেন । আজ সকালে চা দিতে গিয়ে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় পরিবারের লোকজন । মৃত ব্যক্তির নাম পরীক্ষিত দাস(43) । রতুয়া 2 ব্লকের পরাণপুর গ্রামের ঘটনা৷ খবর পেয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুখুরিয়া থানার পুলিশ৷ এই ঘটনায় পুলিশের তরফে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে৷ তবে, এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি৷

পরাণপুরের জনপ্রিয় পাড়ায় পীরক্ষিতর বাড়ি৷ বাড়িতে রয়েছেন মা হেলারানি দাস, স্ত্রী নিবেদিতা দাস ও এক ভাইপো ভাস্কর৷ মাত্র এক বছর আগেই তাঁর বিয়ে হয়৷ আমের ব্যবসা করতেন তিনি৷ ভিনরাজ্যেও আম পাঠাতেন ৷ পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বছর তিনি অসমে আম পাঠিয়েছিলেন৷ তার বকেয়া টাকা তুলতেই তিনি লকডাউনের আগে সেখানে যান৷ তারপর সেখানেই আটকে পড়েন । পাশাপাশি অসমের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও তিনি বকেয়া টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হয় । তাই বুধবার তিনি অসম থেকে বাড়ি ফিরে আসেন৷ ফেরার পরই তিনি বাড়ির একটি ঘরে হোম কোয়ারানটিনে ছিলেন৷ আজ সকালে স্ত্রী তাঁকে চা দিতে যান৷ তখনই তিনি দেখেন ঘরের ভিতরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগানো অবস্থায় পরীক্ষিতর দেহ ঝুলছে৷ তাঁর চিৎকারে ছুটে আসে পরিবারের সদস্যরা৷ ছুটে আসে প্রতিবেশীরাও৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছায় পুখুরিয়া থানার পুলিশ । দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায় তারা৷

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের আম ব্যবসায় প্রায় 40 লাখ টাকা দেনা হয়েছিল পরিক্ষীত বাবুর৷ এর মধ্যে শুধু আমের ঝুঁড়ির জন্যই তাঁর প্রায় 17 লাখ টাকা দেনা হয়েছিল৷ বাগানের মালিক ও ঝুঁড়ি ব্যবসায়ীদের তিনি জানিয়েছিলেন, অসমের ব্যবসায়ীদের কাছে আমের বিক্রি বাবদ প্রায় 50 লাখ টাকা পাবেন৷ সেই টাকা তুলে তিনি সব দেনা শোধ করে দেবেন৷ কিন্তু লকডাউনে অসমের ব্যবসায়ীদের থেকে মাত্র 30 শতাংশ টাকাই উদ্ধার করতে পারেন তিনি৷ বাকি টাকা না মেলায় তিনি অসম থেকে ফিরে আসেন৷ এলাকাবাসীর ধারণা, দেনা শোধ করতে পারবে না ভেবেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি৷

পুখুরিয়া ফাঁড়ির OC ঝোটন প্রসাদ বলেন, "ব্যবসা সূত্রে বাজারে প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছিল ওই ব্যক্তির৷ গত বছরের ব্যবসার টাকা আদায় করতে তিনি অসম গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা৷ সেখানে তিনি লকডাউনে আটকে পড়েন৷ বকেয়া টাকাও তিনি আদায় করতে পারেননি৷ এতে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন৷ প্রাথমিক তদন্তে আমাদের ধারণা, সেই কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন৷ তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে৷ তার রিপোর্ট এখনও আসেনি৷ রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে জানা যাবে৷ এই ঘটনায় আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে৷ মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হয়নি৷ অভিযোগ দায়ের হলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details