মালদা, 8 মে : গত বছর ইদের আগেই হানা দিয়েছিল ঘাতক করোনা ৷ দেশ জুড়ে জারি করা হয়েছিল পূর্ণাঙ্গ লকডাউন ৷ ফলে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদা জেলার ইদের বাজার ব্যপক মার খেয়েছিল ৷ শুধু জামাকাপড়ের ব্যবসাতেই ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছিল 350 কোটি টাকা ৷ মহাজনের কাছে বাকিতে মাল নিয়ে বিক্রি করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা ৷ মহাজনের টাকা শোধ দিতে অনেককে ঋণ করতে হয় ৷ এবারও অনেক ব্যবসায়ী ব্যাঙ্ক কিংবা খোলা বাজার থেকে ঋণ নিয়ে জামাকাপড়ে দোকান ভরেছেন ৷ কিন্তু এবার আরও ঘাতক হয়ে দেখা দিয়েছে করোনা ৷ মৃত্যুর হারও বেড়ে গিয়েছে ৷ আতঙ্কে অনেকেই ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না ৷ তাই চারদিন আগেও মালদা শহরের ইদের বাজারে ভিড় নেই, বলছেন ব্যবসায়ীরা ৷ এবারও বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের ৷
জেলার কাপড় ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সব ঠিক থাকলে প্রতি বছর মালদায় শুধুমাত্র ইদে 350 থেকে 400 কোটি টাকার জামাকাপড়ের ব্যবসা হয় ৷ গত বছর পূর্ণাঙ্গ লকডাউনে ইদের বাজারে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছিল 300 থেকে 350 কোটি টাকা ৷ এবার পূর্ণাঙ্গ লকডাউন হয়নি বটে, কিন্তু একদিকে করোনার মারণ ক্ষমতা বেড়ে যাওয়া, অন্যদিকে আংশিক লকডাউনে এবারও ক্ষতির পরিমাণ অন্তত 250 কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে ৷ এবারও গ্রাম থেকে মানুষজন খুব একটা কেনাকাটা করতে শহরে আসছেন না ৷ ফলে ব্যবসায়ীদের আবেদন মেনে জেলা প্রশাসন টানা পাঁচ ঘণ্টা দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিলেও কোনও লাভ হচ্ছে না ৷
মালদা শহরের চিত্তরঞ্জন পৌর বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী অনুপকুমার দত্ত বলছেন, "গতবার ইদের মুখে দিন কয়েক দোকান খুলতে পেরেছিলাম ৷ সেই ক’দিনে ভালোই ব্যবসা করেছিলাম ৷ কিন্তু গতবারের থেকেও এবার খারাপ দশা ৷ দুপুরবেলায় দোকানে একজন ক্রেতাও নেই ৷ এবার 25 শতাংশও ব্যবসা হয়নি ৷ হাতে আর মাত্র চারদিন ৷ মনে হচ্ছে, করোনার মারণ ক্ষমতা বেড়ে যাওয়াতেই ব্যবসার এই দশা ৷ আর ব্যবসা ওঠার আশা নেই ৷ গ্রামের মানুষ বাজার করতে আসছে না ৷ শুধুই শহরকেন্দ্রিক ব্যবসা হচ্ছে ৷ এভাবে ব্যবসা হয় না ৷"