মালদা, ২৭ জুন: ভোর হয়েছে অনেকক্ষণ । রোদের তাপ লাগছে গায়ে । তবু ছেলে-বউমার ঘুম ভাঙেনি । এদিকে ছেলে-বউমার ধান সিদ্ধ করার কথা । কখন হবে ধান সিদ্ধ? সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ছেলে-বউমাকে ডাকতে যান বৃদ্ধা শোভাদেবী । ছেলের শোওয়ার ঘরের দরজায় টোকা মারতে খুলে যায় দরজা । ভিতরে চোখ পড়তেই বুক শুকিয়ে যায় তাঁর । দেখেন, ঘরের চালা থেকে ঝুলছে ছেলের দেহ, মেঝেতে পড়ে রয়েছে বউমা । তাঁর মুখ দিয়ে বেরোনো গ্যাঁজলা ততক্ষণে শুকিয়ে গিয়েছে ।
বিছানায় শুয়ে রয়েছে তিন বছরের নাতি । কী হয়েছে, তা বোঝার বয়স হয়নি তার । ঠাকুমাকে দেখেই কাঁদতে শুরু করে সে । আকস্মিকতা কাটিয়ে চিৎকার করে ওঠেন শোভাদেবী । মায়ের চিৎকার শুনে চলে আসেন পাশের বাড়িতে থাকা তাঁর মেয়ে । আসেন পড়শিরাও । তবে কী কারণে সন্তানকে রেখে দম্পতি আত্মঘাতী হলেন, তার উত্তর এখনও খুঁজে পাননি কেউ ।
মৃত দম্পতির নাম গৌতম হালদার (30) ও লক্ষ্মী হালদার (24) । প্রায় পাঁচ বছর আগে গাজোল থানা এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মীদেবীর বিয়ে হয় কৈলাসপুর গ্রামের গৌতমবাবুর সঙ্গে । গৌতমবাবু পেশায় রেফ্রিজারেটরের মিস্ত্রি ছিলেন । অন্যের দোকানে কাজ করতেন তিনি । পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে স্মার্টফোন নিয়ে গৌতমবাবু ও লক্ষ্মীদেবীর মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল । এর জেরে লক্ষ্মীদেবীর স্মার্টফোনটি গৌতমবাবু নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন । এনিয়ে কয়েকদিন তাঁদের মধ্যে বেশ ঝামেলা হয়েছিল । কিন্তু পরবর্তীতে তা মিটেও যায় ।
গতকাল রাত পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ করেননি গৌতমবাবুর মা শোভা হালদার । আজ সকালে ঘর থেকে ওই দম্পতির দেহ উদ্ধার হয় । খবর পেয়ে দেহ দু‘টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় মালদা থানার পুলিশ ।