মালদা, 7 এপ্রিল: এ এক আজব কাণ্ড ! যে সংসদ এলাকার 100 শতাংশ বাসিন্দাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত, সেই সংসদকেই তফসিলি জাতি মহিলা আসনের জন্য সংরক্ষিত করে বসে আছে নির্বাচন কমিশন ! অতএব, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট করাতে হলে এই কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী আনতে হবে এলাকার বাইরে থেকে ! আর তেমনটা ঘটলে তাঁরা সকলে মিলে ভোট বয়কট করবেন ! স্পষ্ট একথা জানিয়ে দিয়েছেন পুরাতন মালদা ব্লকের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোটপুর ও ছোটপুর ভেস্টপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা ৷ তাঁদের অভিযোগ, একটি সংসদকে ভেঙে দু'টি করতে গিয়েই গন্ডগোল করেছে নির্বাচন কমিশন ৷ এ নিয়ে প্রশাসনের নানা স্তরে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি ৷ কমিশনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংরক্ষণ নিয়ে আর কোনওরকম সংশোধন করা হবে না ৷ নির্বাচন কমিশনের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ গ্রামের মানুষ ৷
বিধানসভা নির্বাচন তালিকার 189 অংশে রয়েছে ছোটপুর ও ছোটপুর ভেস্টপাড়া ৷ এখানে মোট ভোটার রয়েছেন 876 জন ৷ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের নাম সাধইল ছোটপুর প্রাইমারি স্কুল ৷ বুথ নম্বর 98 ৷ ভোটদাতারা মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের 2 নম্বর সংসদে রয়েছেন ৷ পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসন নম্বর যথাক্রমে 16 এবং 34 ৷ সংশ্লিষ্ট 867 জন ভোটারের প্রত্যেকেই সংখ্যালঘু ৷ অথচ, এই বুথকেই এবার তফসিলি জাতি ও মহিলা সংরক্ষিত করা হয়েছে ! (প্রসঙ্গত, তফসিলি জাতি ও উপজাতি হিন্দুর সম্প্রদায়ের আওতাভুক্ত ৷)
গ্রামের বাসিন্দা সাবির আলি বলছেন, "আমি শুনেছি, এবার না কি আমাদের গ্রামের কাউকে এই আসনে প্রার্থী করতে দেওয়া হবে না ! কেন, তা বলতে পারব না ৷ সারাজীবন গ্রামের প্রার্থীদেরই ভোট দিয়ে এসেছি ৷ হঠাৎ করে শুনছি, এই সংসদ নাকি তফসিলি জাতির মহিলা সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে ৷ অথচ এই গ্রামে একজনও তফশিলি জাতির মানুষ নেই ৷ আমরা এর প্রতিবাদে ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷"
আর এক গ্রামবাসী মহম্মদ ওবাইদুল শেখ জানাচ্ছেন, "বিষয়টি নিয়ে আমরা বিডিওর কাছে গিয়েছিলাম ৷ তাঁকে সব জানিয়েছি ৷ এই সংসদে সকলেই সংখ্য়ালঘু ভোটার ৷ একজনও হিন্দু ভোটার নেই ৷ বিডিও বলছেন, তিনি কিছু করতে পারবেন না ৷ যা করার জেলাশাসক করবেন ৷ গ্রামের কয়েকজন জেলাশাসকের সঙ্গেও দেখা করেছেন ৷ কিন্তু, তিনিও কিছু করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ৷ গ্রামের কেউ যদি ভোটে প্রার্থী না হতে পারেন, তাহলে এবার আমরা ভোট দেব না ৷ বাইরের কাউকে আমরা ভোট দেব না ৷"