মালদা, 21 ডিসেম্বর: সার্কেলে হবে শিক্ষা উৎসব ৷ প্রাথমিকের পড়ুয়ারা সেই উৎসবে অংশ নেবে ৷ তাই কোনও সরকারি নির্দেশ না থাকা সত্ত্বেও নিজের ইচ্ছেয় সার্কেলের সব স্কুলে পঠনপাঠন স্থগিত করে শিক্ষকদের উৎসবে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সাব ইন্সপেক্টর অফ স্কুলস ৷ তাঁর এই নির্দেশিকার জেরে বুধবার মিড ডে মিলের খাবার থেকে বঞ্চিত থাকল হাজার ছয়েক শিশু ৷ এই পদক্ষেপ নিয়ে এসআইয়ের সাফাই, কিছু পেতে গেলে কিছু ত্যাগ করতেই হয় ৷ যদিও তাঁর এই সিদ্ধান্ত সমালোচিত হয়েছে প্রশাসনিক মহলে ৷ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তের দায় সম্পূর্ণভাবে ওই এসআইয়ের ৷ গোটা ঘটনায় এসআইয়ের বিরুদ্ধে পুরাতন মালদার বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন বেশ কিছু অভিভাবক ৷
মালদা সার্কেলে রয়েছে মোট 59টি প্রাথমিক স্কুল ৷ এই সার্কেলের বেশিরভাগ এলাকাই আদিবাসী কিংবা রাজবংশী সম্প্রদায় অধ্যুষিত ৷ মূলত গরিব মানুষজনের বসবাস ৷ ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করতে সরকারি স্কুলের উপরেই তাঁরা ভরসা করেন ৷ বুধবার ছিল ওই সার্কেলের টিচিং লার্নিং মেটেরিয়াল প্রতিযোগিতা ৷ এককথায় শিক্ষা উৎসব ৷ সাহাপুর হাইস্কুল মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সার্কেলের 59টি স্কুলই উৎসবে অংশ নেয় ৷ এই উৎসবের জন্য সম্প্রতি এসআই স্কুলগুলির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নির্দেশিকা পাঠান, টিএলএম মেলা দেখার জন্য সার্কেলের সমস্ত শিক্ষককে অবশ্যই আসতে হবে ৷ তার জন্য ক্লাস সাসপেন্ড রাখতে হবে ৷ প্রতিটি স্কুল থেকে অন্তত 10 জন করে পড়ুয়াকে উৎসবে নিয়ে আসতে হবে ৷
এই নির্দেশিকার জেরেই এ দিন সার্কেলের সমস্ত স্কুল বন্ধ ছিল ৷ কোথাও পঠনপাঠন কিংবা মিড ডে মিল তৈরি হয়নি ৷ কোনও খুদে পড়ুয়া খাবার পায়নি ৷ এ নিয়ে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগপত্রে বেশ কিছু পড়ুয়ার অভিভাবকরা জানিয়েছেন, তাঁরা ভীষণ গরিব ৷ তাঁদের ছেলেমেয়েরা মিড ডি মিলের খাবার খেয়েই দুপুরে পেট ভরায় ৷ কিন্তু এ দিন তাঁদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে এসে ঘুরে যায় ৷ স্কুল বন্ধ থাকায় তারা মিড ডে মিলের খাবার পায়নি ৷ তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, এ দিন এই চক্রের কোনও স্কুলেই মিড ডে মিলের খাবার দেওয়া হয়নি ৷ অথচ এ দিন কোনও সরকারি ছুটি ছিল না ৷ এসআই নিজের সিদ্ধান্তে স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ এর জন্য তাঁরা এসআইয়ের শাস্তি দাবি করছেন ৷