পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Kanyashree Scam: কন্যাশ্রী-সবুজসাথীতে দুর্নীতি! প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ হাইকোর্টের - কলকাতা হাইকোর্ট

সরকারি প্রকল্পে পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৷ মালদার একটি স্কুলের ঘটনা ৷ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷

Etv Bharat
হাইকোর্ট

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 21, 2023, 2:55 PM IST

মালদা, 21 সেপ্টেম্বর:কন্যাশ্রী থেকে সবুজসাথী, প্রতিটি সরকারি প্রকল্পেই দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছিল প্রধান শিক্ষকের ৷ অভিযোগ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তহবিলে দুর্নীতি করা নিয়েও ৷ এই নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ, ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা শিক্ষা দফতরেও অভিযোগ জানিয়েছেন অভিভাবকদের একাংশ ৷ কিন্তু তাতেও কাজ কিছু হয়নি ৷ শেষ পর্যন্ত তাঁরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ এই নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত ৷ তদন্তের রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা পড়ে ৷ তাতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে বলেই জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর ৷

এরপরেই হাইকোর্টের বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে (মাধ্যমিক) অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে ৷ হাইকোর্টের এই রায় জেলায় এসে পৌঁছতেই শোরগোল পড়েছে প্রশাসনিক মহলে ৷ আদালতের নির্দেশ দ্রুত পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া ৷

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মহম্মদ খাইরুল আলম ৷ তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের তালবাংরুয়া হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ৷ দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে কন্যাশ্রী ও সবুজসাথী প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে ৷ এই নিয়ে মাদ্রাসায় একাধিকবার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অভিভাবকরা ৷ তাঁদের বক্তব্য, কাটমানি নিয়ে প্রধান শিক্ষক কন্যাশ্রী প্রকল্পের ছাত্রীদের নাম নথিভুক্ত করেন ৷ মাদ্রাসার ছাত্রী না এমন মেয়েদের নামও তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠানের কন্যাশ্রী তালিকায় নথিভুক্ত করেছেন ৷ এমনকি বিবাহিত মহিলাদেরও তিনি বেআইনিভাবে সরকারি এই প্রকল্পের সুবিধে পাইয়ে দিয়েছেন ৷ তাঁকে টাকা না দিলে কোনও পড়ুয়া সবুজসাথী সাইকেল পাবে না ৷ পাবে না সরকারের দেওয়া ট্যাবও ৷ এছাড়াও মাদ্রাসার ফান্ড থেকে তিনি প্রচুর টাকা বেআইনিভাবে হস্তগত করেছেন ৷


কলকাতা হাইকোর্টে যে অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তাঁদের একজন মহম্মদ তজিবুর রহমান ৷ তাঁর কথায়, "ছাত্রছাত্রীদের সমস্ত সরকারি প্রকল্পেই দুর্নীতি করেছেন প্রধান শিক্ষক ৷ মাদ্রাসার ফান্ড থেকেও লাখ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন ৷ এসব নিয়ে আমরা তাঁকে একাধিকবার সতর্ক করেছি ৷ মাদ্রাসায় বিক্ষোভ দেখিয়েছি ৷ কিন্তু তিনি শোধরাননি ৷ উলটে আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিতেন ৷ 2017 সালে এই মাদ্রাসায় শেষবার পরিচালন কমিটির নির্বাচন হয়েছিল ৷ সেই নির্বাচনও তিনি অবৈধ উপায়ে করিয়েছিলেন ৷ পরে আদালতের রায়ে ওই নির্বাচন বাতিল হয়ে যায় ৷ তারপর থেকে তিনি আর মাদ্রাসায় পরিচালন কমিটির নির্বাচন হতে দেননি ৷ অনেক টালবাহানার পর আগামী 9 অক্টোবর সেই নির্বাচন হবে ৷ আমরা চাই, হাইকোর্টের নির্দেশ দ্রুত পালন করুক প্রশাসন ৷ যাতে তিনি সেই নির্বাচনে কোনওভাবে যুক্ত থাকতে না পারেন ৷"

এদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক খাইরুল আলমের দাবি, "আইন মেনেই প্রতিষ্ঠান চালাই ৷ হাইকোর্টের নির্দেশের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই ৷ তবে আদালতের যে কোনও নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছি ৷"

এই নিয়ে জেলা শিক্ষা দফতরের কোনও আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে চাননি ৷ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুজিত সামন্ত ফোন ধরেননি ৷ তবে জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, "হাইকোর্টের রায় অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে ৷ সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে হাইকোর্টের নির্দেশ দ্রুত কার্যকর করতে বলব ৷"

আরও পড়ুন : স্কুল ইউনিফর্ম বিতরণ প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টে

ABOUT THE AUTHOR

...view details