মালদা, 12 নভেম্বর: পুকুর থেকে উদ্ধার হল দুই সন্তান-সহ মায়ের মৃতদেহ ৷ এই ঘটনায় মেয়ের স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছেন বাপের বাড়ির লোকজন ৷ শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদার রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের ভাদো গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কয়লাপাথার গ্রামে ৷
মৃত বধূর নাম জেলেখা বিবি (27) ৷ মৃত দুই সন্তানের নাম মারিয়ম খাতুন (6) ও মহম্মদ নবি আজাদ (4) ৷ খবর পেয়ে তিনটি দেহ উদ্ধার করেছে রতুয়া থানার পুলিশ ৷ ঘটনার পর থেকেই মৃত বধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ৷ মৃতদেহ তিনটির ময়নাতদন্ত হবে ৷ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷
বছর আটেক আগে মানিকচক ব্লকের ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জেসারতটোলা গ্রামের বাসিন্দা জেলেখার বিয়ে হয় কয়লাপাথার গ্রামের লোকমান আলির সঙ্গে ৷ লোকমান পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ৷ তাঁদের দুই সন্তান ৷ জেলেখার পরিবারের অভিযোগ, সম্প্রতি লোকমান কাজে যাচ্ছিলেন না ৷ বাড়িতেই থাকতেন ৷ মাঝেমধ্যে তিনি স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপও দিতেন ৷ এনিয়ে সংসারে অশান্তি চলছিল ৷ হয়তো, সেই কারণে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে খুন করে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন স্বামী লোকমান ও বাড়ির অন্যরা ৷
শনিবার রাতে জেলেখা বিবির বাবা আবু বক্কর বলেন, "মেয়ে আর নাতি-নাতনি নাকি বিকেল তিনটে নাগাদ পুকুরে ডুবে গিয়েছিল ৷ আমি সেই খবর পাচ্ছি মগরিবের নমাজ (সন্ধের নমাজ) পড়ে বাড়ি ফেরার পর ৷ সেই খবর জামাই কিংবা তার বাড়ির কেউ দেয়নি ৷ মেয়ের এক প্রতিবেশী আমাদের সেই খবর দেন ৷ খবর পেয়ে আমরা মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যাই ৷ তখনও ওর শ্বশুরবাড়ির সবাই বাড়িতে ছিল ৷ আমাকে তারা বলে, পুকুরে ডুবে নাকি মেয়ের মৃত্যু হয়েছে ৷"
তিনি প্রশ্ন করেন, "মেয়ে কি নিজে ডুবতে পারে ? তাও আবার দুই ছেলেমেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ডুবে মরল ? নিজের সন্তানদের কোনও মা জলে ডুবিয়ে মারতে পারে ? মেয়ের চোখ-মুখ দিয়ে রক্ত বেরচ্ছে ৷ আমার সন্দেহ, আমার মেয়েকে ওরা মেরেছে ৷ পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ পুকুরে ফেলে দিয়েছে ৷ পরে নাতি আর নাতনিকেও ওরা পুকুরে ডুবিয়ে মেরে ফেলেছে ৷ আমি এই ঘটনার সঠিক তদন্ত চাই ৷ মেয়ের সংসারে অশান্তি ছিল ৷ মেয়ে মাঝেমধ্যে আমাকে সেকথা বলেছে ৷ আমি গুরুত্ব দিইনি ৷ আমি দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই ৷"