মালদা, ৬ এপ্রিল : শাসকদলের কাছে রতুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের লড়াই ক্রমেই শক্ত হয়ে উঠছে৷ আজ ওই কেন্দ্রের ভোটের খেলা জমিয়ে দিয়েছেন সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া শেখ ইয়াসিনের স্ত্রী পায়েল খাতুন৷ ওই কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী হিসাবে আজ তিনি নিজের মনোনয়ন দাখিল করেছেন৷ তাঁর মনোনয়ন যে বিজেপিকে অক্সিজেন জোগাবে, তা নিয়ে দ্বিমত নেই রাজনৈতিক মহলের৷ যদিও এনিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি নন শেখ ইয়াসিন৷ তাঁর সাফ কথা, তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেও তাঁর স্ত্রী পায়েল খাতুন এখনও তৃণমূলে রয়েছেন৷ তিনি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষও বটে৷ তাই নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনিই চিন্তাভাবনা করবেন৷ এদিকে পায়েল জানিয়েছেন, বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিট না পেয়েই তিনি রতুয়া কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৷ এখানে স্বামীর বিজেপি যোগের কোনও বিষয় নেই৷ তিনি মানুষের পাশে ছিলেন, মানুষের পাশেই থাকতে চান৷ তবে এ-নিয়ে এখনও রতুয়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সমর মুখোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷
২০১৩ সালে রতুয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ এলাকার একাধারে জনপ্রিয় ও বিতর্কিত নেতা শেখ ইয়াসিনের ৷ তিনি বাহারাল এলাকার বাসিন্দা৷ প্রথম থেকেই তৃণমূল করেছেন৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর স্ত্রী পায়েল খাতুন তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদ আসনে জয়ী হয়ে জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষের চেয়ার পান৷ ইয়াসিন ও সমর মুখোপাধ্যায়ের বিরোধ এলাকার রাজনীতিতে সুপরিচিত৷ এর আগে তাঁদের বিরোধিতা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়৷ নির্বাচন ঘোষণার আগে বাহারালে নিজের উদ্যোগে এক জনসভার আয়োজন করেন ইয়াসিন৷ জেলাস্তরের কোনও নেতাকে সেই সভায় দেখা না গেলেও সভায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল৷ সেই সভার আয়োজন করে ইয়াসিন কার্যত দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছিলেন, রতুয়া কেন্দ্রের টিকিট যেন তাঁকেই দেওয়া হয়৷ ওই সভা থেকে তিনি দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন৷ তার কিছুদিন পরেই তিনি কলকাতায় গিয়ে এলাকার জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক জনপ্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন৷ তার পরেই এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভে সরব হয় তৃণমূলের একাংশ৷ তাঁর বিরুদ্ধে মিছিলও বের করা হয় এলাকায়৷ যদিও এসব বিরোধিতাকে ইয়াসিন কোনও গুরুত্ব দেননি৷ তবে রতুয়া কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করেনি গেরুয়া শিবিরও৷ এরপরেই তিনি নিজেকে খানিকটা গুটিয়ে নেন বলে অভিমত স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের৷ নির্বাচনে তাঁকে এখনও দলের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি৷