পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

মালদায় নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা তৃণমূল নেত্রীর, বাড়তি অক্সিজেন বিজেপির ? - assembly election 2021

২০১৩ সালে রতুয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ এলাকার একাধারে জনপ্রিয় ও বিতর্কিত নেতা শেখ ইয়াসিনের৷ তিনি বাহারাল এলাকার বাসিন্দা৷ প্রথম থেকেই তৃণমূল করেছেন৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর স্ত্রী পায়েল খাতুন তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদ আসনে জয়ী হয়ে জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষের চেয়ার পান৷ ইয়াসিন ও সমর মুখোপাধ্যায়ের বিরোধ এলাকার রাজনীতিতে সুপরিচিত৷

TMC
মনোনয়ন জমা নির্দল প্রার্থীর

By

Published : Apr 6, 2021, 9:07 PM IST

মালদা, ৬ এপ্রিল : শাসকদলের কাছে রতুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের লড়াই ক্রমেই শক্ত হয়ে উঠছে৷ আজ ওই কেন্দ্রের ভোটের খেলা জমিয়ে দিয়েছেন সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া শেখ ইয়াসিনের স্ত্রী পায়েল খাতুন৷ ওই কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী হিসাবে আজ তিনি নিজের মনোনয়ন দাখিল করেছেন৷ তাঁর মনোনয়ন যে বিজেপিকে অক্সিজেন জোগাবে, তা নিয়ে দ্বিমত নেই রাজনৈতিক মহলের৷ যদিও এনিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি নন শেখ ইয়াসিন৷ তাঁর সাফ কথা, তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেও তাঁর স্ত্রী পায়েল খাতুন এখনও তৃণমূলে রয়েছেন৷ তিনি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষও বটে৷ তাই নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনিই চিন্তাভাবনা করবেন৷ এদিকে পায়েল জানিয়েছেন, বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিট না পেয়েই তিনি রতুয়া কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৷ এখানে স্বামীর বিজেপি যোগের কোনও বিষয় নেই৷ তিনি মানুষের পাশে ছিলেন, মানুষের পাশেই থাকতে চান৷ তবে এ-নিয়ে এখনও রতুয়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সমর মুখোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷

২০১৩ সালে রতুয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ এলাকার একাধারে জনপ্রিয় ও বিতর্কিত নেতা শেখ ইয়াসিনের ৷ তিনি বাহারাল এলাকার বাসিন্দা৷ প্রথম থেকেই তৃণমূল করেছেন৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর স্ত্রী পায়েল খাতুন তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদ আসনে জয়ী হয়ে জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষের চেয়ার পান৷ ইয়াসিন ও সমর মুখোপাধ্যায়ের বিরোধ এলাকার রাজনীতিতে সুপরিচিত৷ এর আগে তাঁদের বিরোধিতা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়৷ নির্বাচন ঘোষণার আগে বাহারালে নিজের উদ্যোগে এক জনসভার আয়োজন করেন ইয়াসিন৷ জেলাস্তরের কোনও নেতাকে সেই সভায় দেখা না গেলেও সভায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল৷ সেই সভার আয়োজন করে ইয়াসিন কার্যত দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছিলেন, রতুয়া কেন্দ্রের টিকিট যেন তাঁকেই দেওয়া হয়৷ ওই সভা থেকে তিনি দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করেন৷ তার কিছুদিন পরেই তিনি কলকাতায় গিয়ে এলাকার জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক জনপ্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন৷ তার পরেই এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভে সরব হয় তৃণমূলের একাংশ৷ তাঁর বিরুদ্ধে মিছিলও বের করা হয় এলাকায়৷ যদিও এসব বিরোধিতাকে ইয়াসিন কোনও গুরুত্ব দেননি৷ তবে রতুয়া কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করেনি গেরুয়া শিবিরও৷ এরপরেই তিনি নিজেকে খানিকটা গুটিয়ে নেন বলে অভিমত স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের৷ নির্বাচনে তাঁকে এখনও দলের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি৷

প্রার্থীর বক্তব্য়

আরও পড়ুন- 8 রিটার্নিং অফিসারকে বদলি করল কমিশন

ভোটের মুখেও শেখ ইয়াসিনের এই নিষ্পৃহতা কি গেরুয়া শিবিরের গেম প্ল্যানের অংশ? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছিল রতুয়া৷ শেষ পর্যন্ত আজ তার জবাব মিলল৷ নিশ্চিতভাবেই বিজেপির থিংক ট্যাংকের বার্তাতেই ইয়াসিন এখনও পর্যন্ত নিজেকে ভোটের রাজনীতিতে প্রকাশ্যে আনেননি৷ অঙ্কটা আগে জটিল থাকলেও এখন সরল৷ রতুয়া কেন্দ্রে মোট ভোটার দু’লাখ ৮১ হাজার ৩২০৷ মালদা জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার এই কেন্দ্রেই৷ এর প্রায় ৬৩ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটার৷ রাজনৈতিক কৌশলে এবার গোটা রাজ্যেই নতুন এক সমীকরণ দেখা যাচ্ছে৷ সেই সমীকরণ অনুযায়ী এই কেন্দ্রের সংখ্যালঘু ভোটের বেশিরভাগ কংগ্রেস ও তৃণমূলের ঝুলিতে যাওয়ার সম্ভাবনা৷ এই অবস্থায় যদি পায়েল খাতুন যে কয়েক হাজার ভোট পাবেন, তার সুফল পাবেন বিজেপি প্রার্থী অভিষেক সিংঘানিয়া৷ এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, রতুয়া কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে এআইএমআইএম’ও৷ সেক্ষেত্রে তৃণমূল ও কংগ্রেসের ভোট ব্যাংকে যে আরও কিছুটা ধস নামবে তা নিয়ে কারও কোনও দ্বিমত নেই৷

আজ হাজার তিনেক কর্মী-সমর্থকের মিছিলে জেলা প্রশাসনিক ভবনে মনোনয়ন জমা দিতে আসেন পায়েল৷ পরে তিনি বলেন, “আমি মালদা জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ৷ এই পদে থেকে সবসময় মানুষের কাজ করে গিয়েছি৷ বন্যা, কোরোনা ও লকডাউনে সবসময় মানুষের পাশে ছিলাম৷ তাতে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম৷ অথচ দেখা গেল, দল এবার আমাকে টিকিট না দিয়ে সমর মুখোপাধ্যায়কে দিয়েছে৷ সমরবাবু ১০ বছর বিধায়ক থাকলেও মানুষের কোনও কাজ করেননি৷ তাই আমি নির্দল প্রার্থী হয়ে রতুয়ায় লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ আমি মানুষের পাশে থেকে তাদের কাজ করতে চাই৷ আর আমার স্বামী বিজেপিতে গিয়েছেন৷ সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার৷ আমি এখনও তৃণমূলে আছি৷ তৃণমূলে থেকেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে নিজের মনোনয়ন জমা দিয়েছি৷”

ABOUT THE AUTHOR

...view details