মালদা, 2 ফেব্রুয়ারি : ফের শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দলে শোরগোল পড়ল হরিশ্চন্দ্রপুরে ৷ এবার রশিদাবাদ পঞ্চায়েত এলাকায় ৷ সেখানকার অঞ্চল সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফেটে পড়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ ৷ একইসঙ্গে স্লোগান ওঠে ব্লক সভাপতি অপসারণের ৷ গ্রাম পঞ্চায়েত দপ্তরে তালা মেরে, রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান উঠতে থাকে, “মানিক দাস হটাও, তৃণমূল বাঁচাও” ৷ এই মানিক দাসই হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি ৷ একই দাবিতে এর আগে শাসকদলের কর্মীদের বিক্ষোভ ধরা পড়েছিল ওই ব্লকের তুলসিহাটা ও মহেন্দ্রপুর এলাকায় ৷ সব মিলিয়ে ভোটের আগে অস্বস্তি বাড়ছে শাসক শিবিরে ৷ গোটা ঘটনার দায় দলের জেলা নেতৃত্ব এবং একশ্রেণির দলীয় নেতার উপর চাপিয়েছেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি ৷
সম্প্রতি মালদা জেলার প্রতিটি ব্লকে কমিটি গঠন করেছে জেলা তৃণমূল ৷ 146টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গঠন করা হয়েছে অঞ্চল কমিটিও ৷ রশিদাবাদ অঞ্চল কমিটির সভাপতি করা হয়েছে জুয়েল আখতারকে ৷ তাঁকে নিয়েই গতকাল বিক্ষোভের সূত্রপাত ৷ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, জুয়েলের থেকেও এই এলাকায় দলের অনেক পুরানো নেতা ও কর্মী রয়েছে ৷ কারও সঙ্গে আলোচনা না করে, পুরোনো নেতাদের গুরুত্ব না দিয়ে জুয়েলকে সভাপতি করেছেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস ৷
আরও পড়ুন : কোচবিহারে তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষ, আহত 6
বিক্ষোভকারী আলি হোসেন নামে এক তৃণমূলকর্মী বলেন, “এখানে নতুন ব্লক সভাপতি হয়েছেন মানিক দাস ৷ তিনি নিজের ইচ্ছেমতো কাছের লোকজনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করছেন ৷ এখানে জুয়েলকে অঞ্চল সভাপতি করেছেন ৷ আমাদের কিছু জানানো হয়নি ৷ মানিক দাস গত বছর কংগ্রেস থেকে দলে এসেছেন ৷ আর আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে জন্মলগ্ন থেকে এই দল করছি ৷ এই দলের প্রার্থীও হয়েছি ৷ আমরা চাই, এখানে মাসুদ আলমকে অঞ্চল সভাপতি করা হোক ৷ তা না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব ৷ তৃণমূলের ঝান্ডা ধরেই আমাদের আন্দোলন চলবে ৷ আমরা অন্য দলে যাব না ৷”
মালদায় শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল । দেখুন তার ভিডিয়ো... এদিকে মানিকবাবু বলছেন, “যা করেছে জেলা কমিটি করেছে ৷ আমার ক্ষমতায় থাকলে আমি এই ব্লকের সাতটি অঞ্চলেই নিজের মতো করে সভাপতি করতাম ৷ কিন্তু আমি তা করিনি ৷ জেলা কমিটি যাকে অঞ্চল সভাপতি করেছে, তাকেই মেনে নিতে হবে ৷ যারা এসব করছে, তারা দলকে ভালোবাসে না ৷ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই তারা এসব করছে ৷ এসব আমরা সমর্থন করি না ৷ তবে দল এখন বড় হয়েছে ৷ বড় পরিবার হলে একটু সমস্যা দেখা দেয় ৷ আমরা সবাই বসে সমস্যা মিটিয়ে নেব ৷ আমি অল্প দিন হল তৃণমূলে এসেছি ৷ হাতেগোনা 50 জন ছেলে নিয়ে মানুষের কাজ করে যাচ্ছি ৷ এটা বোধহয় অনেকের সহ্য হচ্ছে না ৷ তাই তারা এসব কাজ করছে ৷”