মালদা, 8 অক্টোবর : টিকা নিতে গিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারের মারে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল । বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের ধানগাড়া-বিষণপুর হাই মাদ্রাসায় । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গভীর রাত পর্যন্ত স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখান মৃত ব্যক্তির পরিবার পরিজন-সহ এলাকার বাসিন্দারা । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চাঁচল থানার পুলিশ আধিকারিক সেখানে পৌঁছলে ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা তাঁকে ঘিরে ধরেন ৷ এই ঘটনায় আজ সকালে চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা ।
মৃত বৃদ্ধের নাম আরজাউল হক (69) । বাড়ি ধানগাড়া-বিষণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাঙ্গি গ্রামে । তাঁর পাঁচ ছেলে, এক মেয়ে । দু’ বিঘা কৃষি জমি রয়েছে তাঁর ৷ এছাড়া পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করতেন তিনি ।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় ধানগাড়া-বিষণপুর হাইমাদ্রাসায় করোনা টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করা হয় । আরজাউল সাহেবও সেখানে টিকা নিতে যান । দুপুরে লাইনে দাঁড়ালেও বিকেল পর্যন্ত টিকা পাননি তিনি । স্থানীয়রা জানান, সেখানে দায়িত্বে থাকা এক সিভিক ভলান্টিয়ার নিজের আত্মীয়স্বজনকে ডেকে এনে টিকা পাইয়ে দিচ্ছিলেন । আবার টাকার বিনিময়েও তিনি বেশ কিছু গ্রামবাসীকে তাড়াতাড়ি টিকা পাইয়ে দেন । এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় আরজাউল সাহেব সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাতে আক্রান্ত হন । এরপর ঘটনাস্থলেই সংজ্ঞা হারান তিনি । স্থানীয়রা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে মশালদহ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরাও তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । এরপরেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে শুরু হয় গণবিক্ষোভ ।
আরও পড়ুন :Murder : জমি বিবাদের জেরে যুবক খুন, অভিযুক্তের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
ওই শিবিরে স্ত্রীকে নিয়ে টিকা নিতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা বাবর আলি । তিনি বলেন, "আমি ক্যাম্পে গিয়ে দেখি, সেখানে এক সিভিক ভলান্টিয়ার নিজের আত্মীয়স্বজনদের ডেকে নিয়ে ভিতরে ঢোকাচ্ছে । পরে এলেও সে নিজের লোকজনকে টিকা পাইয়ে দিচ্ছে । এর প্রতিবাদ করেন আরজাউল হক । প্রতিবাদ করায় সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশরা তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে । আমরা চাই, অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করুক পুলিশ ।"
এই বিষয়ে আরজাউল সাহেবের বড় ছেলে তারিকুল শেখ বলেন, "ক্যাম্পে 10-12 জন সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশ ছিল । তাঁরা টাকা নিয়ে পিছন থেকে লোকজন ভিতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছিল । বাবা তার প্রতিবাদ করে । তখনই সিভিক ও ভিলেজ পুলিশরা বাবাকে পেটাতে শুরু করে । ঘরে ঢুকিয়েও পেটায় । এরপর বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয় । আমরা অভিযুক্তদের ফাঁসি চাই ।"