মালদা, 28 সেপ্টেম্বর : গঙ্গার কোপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লক ৷ বীরনগর এক গ্রাম পঞ্চায়েতের চিনাবাজার ও দুর্গারামটোলার পর এবার গঙ্গার গ্রাসে শোভাপুর পারদেওনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পার অনুপনগর গ্রাম ৷ গতকাল সন্ধে থেকে এই গ্রামে শুরু হয়েছে গঙ্গা ভাঙন ৷ ইতিমধ্যে নদীগর্ভে চলে গিয়েছে পাঁচটি বাড়ি ৷ এমনকী সেচ দপ্তরের বাঁধাই করা নদীপাড়ও চলে গিয়েছে নদীগর্ভে ৷ ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেছেন প্রশাসনিক কর্তা ও স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যের প্রতিনিধি ৷ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন BDO ৷
চলতি মরশুমে গত 30 অগাস্ট গঙ্গা প্রথম ছোবল মারে চিনাবাজার গ্রামে ৷ ঘণ্টা দুয়েকের ভাঙনে তলিয়ে যায় বহু বাড়ি ৷ দু’দিন পর একই ঘটনা ঘটে পাশের দুর্গারামটোলায় ৷ কিছুদিন থেমে থাকার পর ফের নদীর কোপে পড়ে চিনাবাজার ৷ ফের নদীতে চলে যায় প্রচুর বাড়ি ৷ এবার পার অনুপনগরে ছোবল মেরেছে গঙ্গা ৷ কয়েক ঘণ্টার ভাঙনে প্রায় দশ বিঘা জমির সঙ্গে পাঁচটি বাড়ি এখন নদীগর্ভে ৷ এলাকার বাসিন্দা জীবন সরকার জানান, "গতকাল বিকেলের পর থেকেই গঙ্গার ভাঙন শুরু হয় ৷ নদীর জলে ফেনা জমতে শুরু করে ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝপাঝপ কাটতে থাকে নদীর পাড় ৷ নদীপাড়ে থাকা পাঁচটি বাড়ি ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার আগেই ধসে পড়তে শুরু করে ৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, এলাকায় যে দেড় কিলোমিটার এলাকা সেচ দপ্তর বাঁধাই করেছিল, সেই এলাকাও নদীতে কেটে পড়তে থাকে ৷ এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে গ্রামের প্রাচীন রাধাগোবিন্দ মন্দিরটিও যে কোনও সময় নদীতে চলে যাবে ৷"
উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগেও পারলালপুর, পার অনুপনগরসহ এই গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রাম তীব্র গঙ্গা ভাঙনের কবলে পড়েছিল ৷ সেই সময় গ্রামের প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র তলিয়ে যায় নদীতে ৷ এলাকার দুটি বুথই মানচিত্র থেকে মুছে যায় ৷ তারপর থেকে ভাঙন না হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল গ্রামবাসীরা ৷ কিন্তু গতকাল থেকে ফের ভাঙন শুরু হওয়ায় ফের রাত জাগা শুরু হয়েছে পার অনুপনগরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ৷